Total Pageviews

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Wednesday, May 25, 2011

পশ্চিমবঙ্গে একটা সাংস্কৃতিক খামতি বরাবরই ছিল। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, অবিভক্ত বঙ্গেও ছিল, বাম জমানাতেও কিছু বদলাল না। বরং, পশ্চিমবঙ্গের যারা নীচের তলার লোক, যাদের ‘শোষিত সমাজ’ বলতে পারেন, তাদের আইডেন্টিটিগুলো মুছে দেওয়া হল। তারা গরিব, তারা শোষিত, যেন স্

পশ্চিমবঙ্গে একটা সাংস্কৃতিক খামতি বরাবরই ছিল। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, অবিভক্ত বঙ্গেও ছিল, বাম জমানাতেও কিছু বদলাল না। বরং, পশ্চিমবঙ্গের যারা নীচের তলার লোক, যাদের 'শোষিত সমাজ' বলতে পারেন, তাদের আইডেন্টিটিগুলো মুছে দেওয়া হল। তারা গরিব, তারা শোষিত, যেন স্রেফ এইটুকুই তাদের পরিচয়! এর মধ্যে যে অজস্র কমিউনিটি আছে, নানা ধরনের সমাজ, সংস্কৃতি, জাতি, সেগুলো কোনও দিনই স্পষ্ট হয়ে উঠল না। আমি বলব, এটা বাংলার রাজনীতিরই দোষ। সেই জন্যই অবিভক্ত বাংলায় তফসিলি সম্প্রদায় বরাবর মুসলিম লিগকে সমর্থন করেছিল। ভুলে যাবেন না, পাকিস্তানের প্রথম আইনমন্ত্রী কিন্তু বাঙালি ছিলেন, পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানও তাঁরই হাতে তৈরি। জীবনের শেষ কিছু বছর তিনি কলকাতায় ছিলেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে ছোটখাট কোনও কাজও দেখলাম না। কারণ ওই, তথাকথিত সাংস্কৃতিক যোগ্যতা! কালচারাল কোয়ালিফিকেশন। সেটা না থাকলে আপনি কল্কে পাবেন না। দলিত প্রতিনিধি মায়াবতী তো সরকার চালাচ্ছেন, কীসের কালচারাল কোয়ালিফিকেশন? আগে সরকার চালাতে দাও, আপনিই ও সব তৈরি হবে। কিন্তু, কলকাতায় বসে এটা ভাবাই যাবে না। ভাই, তোমাকে কারও জন্য দুঃখ করতে হবে না, কাঁদতে হবে না, শুধু ওদের জায়গাটা ছেড়ে দাও, নিজের ব্যবস্থা ওরা নিজেরাই করে নেবে। আপনি শোষিত সমাজের হয়ে কাজ করছেন আর তাদের নাম পর্যন্ত মুছে দিচ্ছেন! 'তফসিলি' কি কোনও নাম নাকি, ওটা তো একটা অ্যাগ্লোমারেট, সরকারি অভিধা, ওঁদের নিজস্ব কোনও সাংস্কৃতিক পরিচয় নেই? এটা আদিবাসীদের সম্পর্কেও সত্যি! আপনি সাঁওতালদের নাম জানেন, কারণ ওঁরা সংখ্যায় একটু বেশি, কিন্তু বাকিরা? বলতে গেলে, প্রতিটি সংস্কৃতির পরিচয় মুছে দেওয়া হল, কারণ তাদের হয়ে অন্যেরা লড়বে। কেন?

সাক্ষাৎকার...

নৈতিক অধিকার হারিয়েছিল,
তাই বাম বিপর্যয়

অন্য দিকে, তৃণমূল কংগ্রেস নিছকই একটি দল নয়, ক্রমেই একটা 'মুভমেন্ট' হয়ে উঠেছে, যার মধ্যে
আপাতবিরোধী নীতির কিছু দলও পাশাপাশি থাকতে পারে। একান্ত আলাপে জানালেন সমাজবিজ্ঞানী

আশিস নন্দী

প্রায় সাড়ে তিন দশক পরে বাংলায় বামফ্রন্টের শাসন শেষ হল। যাকে একসময় দুর্ভেদ্য বলে মনে হত, সেই বামদুর্গ ভেঙে পড়ল। কেন?
একটা প্রধান কারণ, চিরদিনই বাংলার রাজনীতিতে ব্যক্তির প্রাধান্য বেশি ছিল। এটা আজকের কথা নয়, ১৯৩০-এর দশক থেকেই তা-ই। চিত্তরঞ্জন দাশ, সুভাষচন্দ্র বসু, সুরাবর্দি ...জোয়ারের মতো আসত ভোট, কোনও না কোনও ক্যারিসম্যাটিক ব্যক্তিত্ব, 'লার্জার দ্যান লাইফ' থাকতেন, আপনি সেই স্রোতে ভাসতে ভাসতে ভোট দিয়ে এলেন। রাজনৈতিক দল যে নিজের একটা ভিত্তি তৈরি করে ভোট করবে, এই প্রবণতা ততটা দেখা যায়নি। সেই চেষ্টা কিছুটা গাঁধীর কংগ্রেসে ছিল, কিছুটা তফসিলি সম্প্রদায়ের মধ্যে ছিল,১৯৪৭-এর পরে কিছুটা বামপন্থীদের মধ্যেও ছিল। সুতরাং, বামপন্থীদের সংগঠন একটা ছিলই, তার সঙ্গে তারা কিছু কিছু কাজও করেছিল। ১৯৭৭-এর পরের কয়েক বছরে যে ভূমিসংস্কারটা হল, যেটা অন্যান্য প্রদেশে অনেক দলই করেছে, কিন্তু এখানে প্রথম দিকে বামপন্থীদের জয়ের পিছনে সেই ব্যাপারটা একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। যতই মমতা বলুন 'সায়েন্টিফিক রিগিং', ওই কাজগুলোকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। গায়ের জোর যে একেবারে ছিল না তা নয়, অবশ্যই ছিল, আমি নিজেও তার কিছু কিছু নমুনা দেখেছি।

এই যে গায়ের জোরে ভোট করার কায়দা, এটাকে কি আপনি সংগঠিত, মানে পরিভাষায় 'অর্গানাইজড পার্টি'র চরিত্র বলবেন?
এই সব কাজকর্মকে আমি কোনও সংগঠিত 'পার্টি'র বৈশিষ্ট্য বলে ভাবতে না-ও পারি, কিন্তু সংগঠিত পার্টি সেই ধরনের কাজ করতে পারে। করেও। খুব ইনোভেটিভ সব কায়দা। আমি নিজের চোখে দেখেছি, এক জায়গায় ভোট চলছে, হঠাৎই কিছু মহিলা এসে বুথের সামনে রাস্তায় অশ্লীল গালিগালাজ শুরু করলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোটদাতারা লাইন ছেড়ে বাড়িমুখো, মহিলারা তো প্রায় তৎক্ষণাৎ চলে গেলেন, লাইন ফাঁকা হয়ে গেল। এই সব কাজকর্ম যে অন্য জায়গায় অন্য পার্টিও করে, করে না তা না, পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীরাও করেছে।

এই সূত্রেই আরও একটা প্রশ্ন। সি পি আই এম-এর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গে টানা চৌত্রিশ বছর ক্ষমতায় ছিল। তাদের সাংগঠনিক শক্তির জোরেই কি?
বামপন্থীদের একটা 'ষ্ট্রিট পাওয়ার'-তো ছিলই। সঙ্গে, আমি বলব, এক ধরনের সংস্থার শক্তিও ছিল। এটা ঠিক সাংগঠনিক শক্তি নয়, সে তো 'অর্গানাইজেশনাল পাওয়ার'। সি পি আই এম-এর সেই শক্তির কথা অনেকেই বলেন, তার নমুনাও নানা সময় দেখা গিয়েছে। আমি যার কথা বলছি, সেটা অন্য শক্তি। একটা উদাহরণ দিই। ধরুন, মিনিভ্যান বা অটোর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। আপনি রটিয়ে দিলেন, যারা আমাদের সমর্থক, তারাই পাবে, অন্য কেউ নয়। এর জন্য দলের সদস্য হওয়ার প্রয়োজন নেই, হলে ভাল, না হলেও ক্ষতি নেই, সমর্থনটা যেন আমাদের দিকেই থাকে। এটা বলামাত্র আপনা থেকেই সমাজের একটা অংশ আপনার দিকে চলে এল, আপনার জন্য জান দিয়ে লড়ে গেল। কারণ, তারা জানে, আপনি হারলে তারাও হারবে। এই জিনিসটা পশ্চিমবঙ্গের বাম জমানায় কায়েম হয়ে ছিল, একেবারে পাক্কা বন্দোবস্ত যাকে বলে। বড় চাকরি থেকে একেবারে ছোটখাট নিয়োগ, সব পার্টির বড়কর্তারা ঠিক করে দিচ্ছেন। এটা কিন্তু ঠিক সাংগঠনিক শক্তি নয়। এটা তার বাইরে, আরও বড় কিছু, পলিটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট বললে হয়তো খানিকটা ধরা যায়। দেখলাম বৃন্দা কারাত বলেছেন, বামফ্রন্ট চৌত্রিশ বছর পশ্চিমবঙ্গে সুশাসন চালিয়েছে। বাজে কথা। প্রথম পনেরো-কুড়ি বছর হয়তো ওরা নিজেদের জোরেই জিতেছে। তার পরে, বিশেষ করে শেষ বছর পনেরো তো সকলের কাছেই প্রকট হয়ে গিয়েছিল, কী ভাবে জিততে হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়।

বামফ্রন্ট, বিশেষত সি পি আই এম-এর সম্পর্কে একটা সমালোচনা এই রকম যে, গোটা সমাজটাকেই তারা, পরিভাষায় বললে, 'পলিটিসাইজ' করে ফেলেছিল...
না, এটাকে আমি ঠিক পলিটিসাইজ করা বলি না। যারা ঝাণ্ডা নিয়ে ঘুরেছে, তাদের অধিকাংশই মার্ক্সবাদ দূরস্থান, মার্কসের নামের বানানটুকুও ঠিকঠাক বলতে পারবে না। তো, এই জিনিসটাকে আমি পলিটিসাইজেশন বলব না। এর সঙ্গে নীতি বা আইডিওলজির কোনও সম্পর্ক নেই। এটা পার্টিভক্তি। আপনি সবার জন্য একটা কায়েমি স্বার্থ তৈরি করে দিয়েছেন। পার্টির বাইরে জীবন নেই। অন্য কথা বললে, ভিন্ন মত পোষণ করলে সর্বনাশ। হয়তো চাকরিটাই চলে গেল, কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেল। এ দিকে, বাজার মন্দা! তখন লোকেরা কী করবে? এই যে বামপন্থীরা বলত না, কনজিউমারিজম-এ বিশ্বাস করি না... ও সব বাজে কথা। আসল কথা হল, আপনি যদি গোটা ব্যবস্থাটা এমন করে ফেলেন যে সবার উপরে পার্টি সত্য, স্রেফ পার্টির মাধ্যমেই বেঁচে থাকার সুযোগ পাবেন, নচেৎ নয়, তখন ও সব ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কথা তুললে মুশকিল। পশ্চিমবঙ্গে এই জিনিসটাই হয়েছিল।

পরিভাষায় যাকে 'সোশ্যাল মবিলাইজেশন' বলে, পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সেটা কতটা করতে পেরেছে বলে আপনার মনে হয়?
পশ্চিমবঙ্গে একটা সাংস্কৃতিক খামতি বরাবরই ছিল। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, অবিভক্ত বঙ্গেও ছিল, বাম জমানাতেও কিছু বদলাল না। বরং, পশ্চিমবঙ্গের যারা নীচের তলার লোক, যাদের 'শোষিত সমাজ' বলতে পারেন, তাদের আইডেন্টিটিগুলো মুছে দেওয়া হল। তারা গরিব, তারা শোষিত, যেন স্রেফ এইটুকুই তাদের পরিচয়! এর মধ্যে যে অজস্র কমিউনিটি আছে, নানা ধরনের সমাজ, সংস্কৃতি, জাতি, সেগুলো কোনও দিনই স্পষ্ট হয়ে উঠল না। আমি বলব, এটা বাংলার রাজনীতিরই দোষ। সেই জন্যই অবিভক্ত বাংলায় তফসিলি সম্প্রদায় বরাবর মুসলিম লিগকে সমর্থন করেছিল। ভুলে যাবেন না, পাকিস্তানের প্রথম আইনমন্ত্রী কিন্তু বাঙালি ছিলেন, পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানও তাঁরই হাতে তৈরি। জীবনের শেষ কিছু বছর তিনি কলকাতায় ছিলেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে ছোটখাট কোনও কাজও দেখলাম না। কারণ ওই, তথাকথিত সাংস্কৃতিক যোগ্যতা! কালচারাল কোয়ালিফিকেশন। সেটা না থাকলে আপনি কল্কে পাবেন না। দলিত প্রতিনিধি মায়াবতী তো সরকার চালাচ্ছেন, কীসের কালচারাল কোয়ালিফিকেশন? আগে সরকার চালাতে দাও, আপনিই ও সব তৈরি হবে। কিন্তু, কলকাতায় বসে এটা ভাবাই যাবে না। ভাই, তোমাকে কারও জন্য দুঃখ করতে হবে না, কাঁদতে হবে না, শুধু ওদের জায়গাটা ছেড়ে দাও, নিজের ব্যবস্থা ওরা নিজেরাই করে নেবে। আপনি শোষিত সমাজের হয়ে কাজ করছেন আর তাদের নাম পর্যন্ত মুছে দিচ্ছেন! 'তফসিলি' কি কোনও নাম নাকি, ওটা তো একটা অ্যাগ্লোমারেট, সরকারি অভিধা, ওঁদের নিজস্ব কোনও সাংস্কৃতিক পরিচয় নেই? এটা আদিবাসীদের সম্পর্কেও সত্যি! আপনি সাঁওতালদের নাম জানেন, কারণ ওঁরা সংখ্যায় একটু বেশি, কিন্তু বাকিরা? বলতে গেলে, প্রতিটি সংস্কৃতির পরিচয় মুছে দেওয়া হল, কারণ তাদের হয়ে অন্যেরা লড়বে। কেন?

অর্থাৎ, বামফ্রন্ট একেবারে সর্বাত্মক ভাবেই তাদের 'প্রতিনিধি' হয়ে উঠল! 
এক পরিচিত রাজবংশী ভদ্রলোক, তিনি সিপিএম-এর ছোটখাট নেতাও বটে, বহু কাল পার্টি করেছেন, আমাকে বলেছিলেন, যতই কাজ করুন, ঠিক যখন ডিষ্ট্রিক্ট কমিটির সেক্রেটারি কি ওই রকম কোনও পদে কারওকে দরকার, কলকাতা থেকে ঠিক একজন মুখুজ্যে কি দাশগুপ্ত চলে আসবে। এটা ওই কমিউনিস্ট পার্টির 'ভ্যানগার্ড অব দ্য প্রলেটারিয়েট' সংস্কৃতি থেকে এসেছে। আমার কাছে তো এটাকে অশ্লীল লাগে। যেখানে ভারতের নানা প্রদেশে ব্রাহ্মণ হলে আপনি রাজনীতিতে উঠতেই পারবেন না, মুখ্যমন্ত্রী-টন্ত্রী হওয়া তো ছেড়েই দিন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে আপনি অন্যদের হয়ে কথা বলছেন। কেন? আমার এক বন্ধু মণ্ডল কমিশনের সূত্রে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিল। ফিরে এসে বলল, প্রশাসন স্বীকারই করতে চায় না যে জাতপাত বলে কিছু পশ্চিমবঙ্গে আছে। জাতপাত যদি না-ই থাকবে, তা হলে মন্ত্রিসভায় অনুবীক্ষণ দিয়ে দলিত প্রতিনিধি খুঁজতে হয় কেন? কেন নেতৃত্বের উপর তলায় তেমন একজনও নেই?

কিছুকাল হল পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রদায়গত রাজনীতি অন্য মাত্রায় গিয়েছে। সাম্প্রতিক কালে একটি সমাবেশেই সি পি এম এবং তৃণমূলের প্রতিনিধি এক মঞ্চে ছিলেন, ধর্মতলার মোড়ে একটি সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে। সি পি এম এবং তৃণমূল দু'পক্ষই নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, বামফ্রন্ট তাদের জন্য বিশেষ সরকারি পুরস্কার চালু করেছে। সেই সম্প্রদায়ের যিনি সংঘপ্রধান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক ছেলেকে প্রার্থীও করেছিলেন। এই ব্যাপারটাকে কী ভাবে দেখবেন?

আমি তো বলব, পশ্চিমবঙ্গের উন্নতি হয়েছে। গোটা ভারতে চল্লিশ বছর আগেই যা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে হালফিল সেটা হচ্ছে। কথাটা এই যে, যারা শোষিত, পিছিয়ে-পড়া, তারা নিজের গলায় কথা বলবে। সাফ জানাবে, সমাজ সংস্কার-টংস্কার আমরাই করে ফেলব। বিপ্লব করতে হয় বিপ্লব করব, না করতে হয়, করব না। ভারতের অন্য জায়গায় এ সব কথা এ ভাবে বলতে হয়নি, পশ্চিমবঙ্গে বলতে হল। দক্ষিণ ভারতে তো এই মবিলাইজেশন গত পঞ্চাশ বছর ধরেই চলছে। কামরাজ নাদার-এর মতো নেতা সর্বভারতীয় নেতৃত্বের স্তরে পর্যন্ত গিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে যদি আজ এই জিনিসটা হয়, আমি বলব, ভাল হয়েছে।

প্রসঙ্গ পাল্টাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্চর্য উত্থানের রহস্যটা কী বলে আপনার মনে হয়!
পশ্চিমবঙ্গে সামাজিক এবং রাজনৈতিক যে স্রোতটা রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সূত্রে সেটা ফের খুলে যাওয়ার একটা ইঙ্গিত দেখা গিয়েছে। মমতার পদবি 'বন্দ্যোপাধ্যায়', কলকাতার মেয়ে, পড়াশোনা করেছেন, কিন্তু মমতার স্টাইলটা হচ্ছে পরিভাষায় যাকে বলে 'লো ব্রাও'। ওঁর হালচাল সবই...ঠিক 'সাব-অলটার্ন' না বললেও 'লো ব্রাও' তো বটেই। জনৈক বাম নেতা, তিনি আবার মন্ত্রীও ছিলেন, একদিন আমার সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণকে বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে তুলনা করলেন। আমি পরিচারিকাদের কোনও ভাবে অসম্মান করতে চাই না, কিন্তু এই হল বামফ্রন্ট! এই সাদামাটা ভাবমূর্তি মমতার সাফল্যের একটা বড় কারণ। তিনি পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিতে এক ধরনের পালাবদলের আভাস দিয়েছেন, বলাই যায়।

আপনি বলছিলেন, বাংলার নির্বাচনে বরাবরই ব্যক্তিবিশেষের প্রভাব বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এই বিধানসভা ভোটে তৃণমূল যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে এগোল, বামফ্রন্ট কি তেমন কারওকে খুঁজে পেল না, যাঁকে সামনে রেখে ভোট লড়া যায়? যে সমস্যাটা জ্যোতি বসুর বেলায়, এমনকী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মুখ্যমন্ত্রিত্বের গোড়ায় হয়নি, এ বার সেটা হল?
খানিকটা সেটা হতেই পারে। বাংলার রাজনীতির মবিলাইজেশনটা বরাবরই ব্যক্তিকে ঘিরে হয়েছে। এই যে এখন যেমন মনে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কেউ নেই, কিছু নেই, এটাও ওই কারণে। এই বিরাট পালাবদলের পিছনে যে বেশ কিছু রাজনৈতিক প্রবাহ আছে, কিছু সামাজিক স্রোত আছে, সেটা এতখানিই যে মমতা না হলেও হয়তো অন্য কেউ উঠে আসতেন, সে সব এখন আর প্রায় চোখেই পড়ছে না। বাংলায় এটা হয়। তবে, একটা কথা আমার মনে হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনমানসটা হয়তো ইনটুইটিভলি অন্যদের চেয়ে ভাল পড়তে পারেন। তা ছাড়া, মনে হয় না যে, ব্যক্তিগত ভাবে ওঁর জীবনে দুর্নীতির স্থান আছে। ফলে, ওঁর একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আছে। তা ছাড়া, বড় বড় কথা বলেন না, আইডিওলজি কপচান না। ফলে, ওঁর সঙ্গে এস ইউ সি আই আছে, যারা কমিউনিস্টদের থেকেও কট্টর, আবার কংগ্রেস আছে।

তা হলে কি বলবেন, ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতিই তৃণমূলের এই অভূতপূর্ব জয়ের কারণ?
না, সেটা একটা কারণ তো বটেই, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এখন যে ফর্ম-টা পেয়েছে, সেটা একটা মুভমেন্ট। বাংলায় 'আন্দোলন' বললে ঠিক বোঝানো যাবে না। স্বাধীনতার আগে কংগ্রেস এই রকম একটা জিনিস ছিল। একটা প্ল্যাটফর্ম। মঞ্চ। তখন তো ডুয়াল মেম্বারশিপ স্বীকৃত ছিল। আপনি অন্য কোনও দলের সদস্য হলেও কংগ্রেসের সদস্য হতে পারতেন। কারণ, কংগ্রেসকে নিছকই একটা দল বলে ভাবা হত না। এটা একটা মঞ্চ। পরাধীন ভারতে আত্মপরিচয়ের মঞ্চ। এখন, তৃণমূল খানিকটা সেই দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে হয়। এখানে কংগ্রেস আছে, এস ইউ সি আই আছে, মাওবাদীরাও সহানুভূতিশীল... আর, ভোট ব্যাপারটা তো একটা এগ্রিগেশন অব ইন্টারেস্ট। এই বিপুল জনতার কাদের স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে, ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, কী ভাবে, সে সব জটিল হিসেব। সেটার আঁচ না পাওয়া পর্যন্ত বোঝা যাবে না, এই ফল কেন হল। তবে, আমার মনে হয়েছে, কোনও কারণে সি পি আই এম রাজ্য শাসনের নৈতিক অধিকারটা হারিয়েছিল। কেন হারাল, তা খতিয়ে দেখা দরকার, কিন্তু এত বড় বিপর্যয়টা সে জন্যেই।

সাক্ষাৎকার: শোভন তরফদার

previous story

editorial

next item


--
Palash Biswas
Pl Read:
http://nandigramunited-banga.blogspot.com/

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Tweeter

Blog Archive

Welcome Friends

Election 2008

MoneyControl Watch List

Google Finance Market Summary

Einstein Quote of the Day

Phone Arena

Computor

News Reel

Cricket

CNN

Google News

Al Jazeera

BBC

France 24

Market News

NASA

National Geographic

Wild Life

NBC

Sky TV