মুর্শিদাবাদের বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে দিলীপ ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে মারধর ও খুনের অভিযোগ জিআরপি-র বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ দায়ের করল আরপিএফ৷
বনগাঁর খয়রাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা দিলীপ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী রমা ঘোষ তারাপীঠ যাচ্ছিলেন৷ সোমবার রাত ১টা নাগাদ তাঁরা বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে নামেন৷
মৃতের স্ত্রীর দাবি,তাঁরা স্টেশনের ওয়েটিংরুমে পরের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন৷ সেইসময় এক জিআরপি কনস্টেবল দু'জনের পরিচয় জানতে চান৷ রমা ঘোষ ভুল করে নিজের বাপের বাড়ির পদবি বলে ফলেন৷ এরপরই দম্পতির সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন ওই কনস্টেবল৷ দু'জনকে জেরা করতে শুরু করেন৷ দুপক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়৷ অভিযোগ তখনই দিলীপ ঘোষকে মারধর করেন অভিযুক্ত কনস্টেবল৷ তাঁকে টানতে টানটে রেল লাইনে ফেলে দেওয়া হয়৷ গুরুতর জখম হন দিলীপ ঘোষ৷ পালিয়ে যান ওই কনস্টেবল৷
স্টেশন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেওয়া হয়৷ অভিযোগ প্রায় ৪৫ মিনিট কেটে গেলেও অ্যাম্বুলেন্স আসেনি৷ এরপর অন্যান্য যাত্রীরাই একটি ভ্যানে করে গুরুতর আহত দিলীপ ঘোষকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা৷
ঘটনায় বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রমা ঘোষ৷ জিআরপির কাছেও অভিযোগ জানানো হয়৷ মঙ্গলবার দুপুরে বহরমপুর যান শিয়ালদার এসআরপি উত্পল নস্কর৷ তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও সাসপেন্ড করা হয়েছে৷ বিভাগীয় তদন্ত চলছে৷ঘটনার নিন্দা করেছেন রেলপ্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী৷ মঙ্গলবারই অভিযুক্ত জিআরপি কনস্টেবলকে আদালতে তোলা হয়৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/34513-2013-03-12-16-13-53
আর্থিক সঙ্কটে জেরবার রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে এ জন্য প্রতি মাসে ১৫ কোটি অর্থাত্ বছরে ১৮০ কোটি টাকা খরচ হবে৷ কোথা থেকে এই টাকা আসবে বিরোধীরা সেই প্রশ্ন তুলেছে৷ সামনে পঞ্চায়েত ভোট৷ এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইমাম ভাতা চালু করেছেন৷ ক্লাবগুলিকে নানা অছিলায় লক্ষ লক্ষ টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ পঞ্চায়েত ভোটের আগে বেকারদের কাছে টানতেই বেকার ভাতার এই প্রকল্প চালু করা হল বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে৷ বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বলেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক এবং বেকার ভাতা দুটোর কোনওটাই চালু হবে না৷ সূর্যবাবুর কথায় স্পষ্ট, তাঁরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন না৷ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সরকারের একদা শরিক কংগ্রেস৷ কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরব বলেন, 'তৃণমূলের বেকাররাই এই ভাতা পাবেন৷' বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা রেজ্জাক মোল্লা বলেন, 'তৃণমূলের বেকাররা ভাতা পেলেও আমাদের আপত্তি নেই৷ বেকাররাই তো পাবেন৷'
প্রসঙ্গত, গত বছর রাজ্য সরকার এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক চালু করেছে৷ এটা হল একটি সরকারি ওয়েবসাইট৷ তাতে বেকাররা নাম নথিভুক্ত করতে পারেন৷ রাজ্যে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে এখন নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি৷ এর মধ্যে একটি অংশ চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহ নেই৷ কিন্তু পুরোপুরি বেকার এমন কর্মপ্রার্থীর তুলনায় সেই সংখ্যাটা সামান্যই৷ স্বভাবতই কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, মাত্র এক লক্ষ বেকারকে ভাতা দিয়ে কর্মহীনদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে৷ একই অভিযোগ উঠেছিল বাম জমানাতেও৷ তৃণমূল নেত্রীও সেই সমালোচনায় গলা মিলিয়েছিলেন৷
১৯৭৮ সালে প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র বেকার ভাতা চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন৷ এ জন্য চাকুরিজীবীদের বেতনের উপর বৃত্তি কর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ সেই কর আজও চালু রয়েছে৷ কিন্তু বেকার ভাতা ১৯৯৭ সাল নাগাদ বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ তার আগে ওই প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে৷ তখন এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত বেকারদেরই বেকারভাতা দেওয়া হত৷ যাদের কার্ডের মেয়াদ ৬ বছরের বেশি ছিল৷
আগামী ২ এপ্রিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উদ্বোধনে হতে চলেছে আইপিএল সিক্সের। আর সেখানেই কলকাতাবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে আসল ধামাকা। আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একসঙ্গে নাচতে দেখা যাবে ক্যাটরিনা কাইফ ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খানের প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট ও রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রর তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হবে উদ্বোধন। সেই অনুযায়ী ওই সময় কোনও খেলা রাখা হচ্ছে না যুবভারতীতে।
বহুদিন ধরেই ঠান্ডা লড়াই চলছে ক্যাটরিনা ও প্রিয়াঙ্কার মধ্যে। তবে কি আইপিএলের উদ্বোধনী মঞ্চই হবে তাঁদের মিলনক্ষেত্র? নাকি একে অপরের দিকে পিছন ফিরেই নাচবেন ক্যাট-বিল্লি?
লিখতে বসেই খবর এল, মারা গেলেন প্রখ্যাত চিত্রকর গণেশ পাইন। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সত্তরোর্ধ এই শিল্পী। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পী মহলে।
১৯৩৭-এ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন গণেশ পাইন। স্কুলের গণ্ডি পেড়িয়ে ভর্তি হন গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে। ১৯৫৯-এ তিনি চিত্র শিল্পে ডিপ্লোমা নিয়ে পাশ করেন। এর পরেই চাকরিতে যোগ না দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। ষাটের দশকের গোড়ার দিকে মন্দার মল্লিকের স্টুডিওতে অ্যানিমেশনের জন্য ছবি এঁকেছেন বেশ কিছুদিন। ১৯৬৩-তে সোসাইটি অফ কন্টেমপোরারি আর্টসের সদস্য হন। এর পর থেকেই সোসাইটির বার্ষিক প্রদর্শনীতে নিয়মিত তাঁর ছবি জায়গা পেতে থাকে।
শুরু থেকেই অবন ঠাকুর এবং গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রভাব ফেলে গণেশ পাইনের কাজে। মূলত রঙ তুলিতেই মাধুরী মেশান তিনি। প্যারিস, পশ্চিম জার্মানি, ব্রিটেন সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে স্থান পায় তাঁর আঁকা ছবি।
তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ কলকাতা তথা সারা পৃথিবীর শিল্পী মহল।
মুখ্যমন্ত্রীকে বিস্ফোরক চিঠি দিলেন আইপিএস অফিসার নজরুল ইসলাম। তেসরা ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মদিনে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা অগ্রাহ্য করে তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন তিনি। তাঁকে অপদস্থ করার জন্য সরাসরি অভিযোগ এনেছেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের কার্যত প্রধান গৌতম সান্যালের বিরুদ্ধে।
চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে তাঁকে ডেকে এনে তাঁকে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ নিতে বলা হয়। তাঁর পদমর্যাদার সঙ্গে ওই পদ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন তিনি। তিনি জানান, এডিজি পদের কোনও আইপিএস অফিসারই ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হতে পারেন না। তাঁকে শিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সচিবের পদ দেওয়া যেতে পারত। অথবা পুলিসের এমন কোনও পদ দেওয়া যেতে পারত যেখান থেকে তিনি পুলিসের বদলি, টেন্ডার খুঁটিয়ে পরীক্ষার কাজ চালাতে পারতেন।
এমনকী এরাজ্যে চিটফান্ডগুলি যে ভাবে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে, সেবিষয়েও নজরদারি চালানোর উপযোগী কোনও পদ দেওয়া যেতে পারত। চিঠিতে তিনি একথাও জানিয়েছেন, এই সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজনেরাই চিটফান্ডগুলির সঙ্গে যুক্ত। ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করায় মুখ্যমন্ত্রী আর দেখতে চান না বলে তাঁকে মহাকরণ থেকে চলে যেতে বলেন গৌতম সান্যাল। এই আইপিএস অফিসারের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য চাটুকারিতায় ব্যস্ত থাকেন গৌতম সান্যাল। তাঁর অভিযোগ, সংখ্যালঘু উন্নয়ন নয় আসলে এই সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য নয়। সিএমওর বিরুদ্ধে এই আইপিএস অফিসার তোপ দাগায় রীতিমতো অস্বস্তিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রীও।
মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের নতুন শাসকদলের বিরুদ্ধে মন্তব্য থাকায় একটি বইকে হুমকি দিয়ে কার্যত নিষিদ্ধ ঘোষণা করল রাজ্য প্রশাসন। সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ না করা হলেও ওই বইটি আর বিক্রি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রকাশককে।
'মুসলমানদের করনীয়' নামের বইটি প্রকাশিত হয় চলতি বছরের জুন মাসে। লেখক রাজ্য পুলিসের এডিজি ডঃ নজরুল ইসলাম। মিত্র ও ঘোষ সংস্থার তরফে এই বইটি প্রকাশ করা হয়েছিল। সংস্থার কর্ণধার সবিতেন্দ্রনাথ রায়ের অভিযোগ বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ প্রকাশকের বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ থেকে একটি ফোন আসে। তাঁর কাছে বইটির একটি কপি চাওয়া হয়। তিনি সেই মুহূর্তে দিতে না পারায় পরের দিন কলেজ স্ট্রিটে মিত্র ঘোষের দফতরে চড়াও হন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা। এমনকী তল্লাসি চালানো হয়েছে প্রকাশকের দফতর, বই ছাপাখানা ও বাঁধাইয়ের দফতরেও। তল্লাসির জেরে দু'ঘণ্টা বন্ধ থাকে কলেজ স্ট্রিটের দোকান। সবিতেন্দ্র বাবু আরও অভিযোগ করেন যে তাঁকে বইটি বিক্রি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিস গ্রেফতার করারও হুমকি দিয়েছে বলে ওই প্রকাশক জানিয়েছেন।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে এই নিষেধাজ্ঞার কারণ নিয়ে। সাধারণত, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, ব্যক্তি বা সমাজ সম্পর্কে কুৎসা, জালিয়াতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে আঘাত করে এমন মন্তব্য থাকলে সেই বইকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এক্ষেত্রে এমন কোনও কারণ দর্শানো হয়নি। তবে কি শাসকদলের সমালোচনার জেরেই এই নির্দেশ? প্রশ্ন উঠেছে সেই নিয়ে সেই নিয়েও।
তবে তাঁর বই নিয়ে এই বিতর্কের ঘটনায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি বর্তমানে এডিজি ট্রেনিং পদে কর্মরত আইপিএস অফিসার ডঃ নজরুল ইসলাম।
শাসক শ্রেণীর মতামত অগ্রাহ্য করে নিজের বিবেক বুদ্ধির ব্যবহার দিন দিন অতিশয় বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এই পরিবর্তিত বঙ্গে আর আমরাও এই নিরুপদ্রব দিনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠচি। মস্তানি উপেক্ষা করে নিজের মতামত ব্যক্ত করার খেসারত দেওয়ার দায় উযেন ঔ কোনো নজরুল ইসলামের মত বেয়াড়া মানুষদেরই মানায়। আমাদের গা বাঁচিয়ে চললেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরে সরানো হল সরকারি আইনজীবীকে। গার্ডেনরিচে পুলিস খুনের ঘটনায় ধৃত মুন্ন ইকবালের জামিনের বিরোধিতা করায় সরানো হল তাঁকে। গত বৃহস্পতিবার বিহার থেকে গ্রেফতার করা হয় মুন্নাকে।
অভিযুক্ত মহম্মদ ইকবালকে গ্রেফতারে দেরি হওয়ায়, কলকাতা পুলিসের একাংশের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছিল সিআইডি। রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ, পুলিসের একটি অংশ ফেরার থাকাকালীন তৃণমূল নেতা মুন্নাকে সাহায্য করেছিল। সে কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করতে দেরি হল বলে দাবি করেছে সিআইডি। ঘটনার ২৩ দিন পর সিআইডির জালে ধরা পড়েন মুন্না। এরপর তাকে গয়া আদালতে পেশ করা হয়। সেখানেই ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।
ঘটনার পর থেকেই শাসকদল প্রথম থেকেই তাকে আড়াল করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করায় মাথা নিচু করে সরে যেতে হয়েছে কলকাতা পুলিসের সর্বোচ্চ পদে থাকা কমিশনারকে। এরপর তার জামিনের বিরোধিতা করে আজ সরে যেতে হল সরকারি আইনজীবীকেও।
কলকাতা: মহাকরণে গার্ডেনরিচকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট পেশ করল সিআইডি৷
ঘটনার দিন মহম্মদ ইকবালের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকর্মীদের জবানবন্দি রেকর্ড করবেন গোয়েন্দারা৷ আজ ভবানী ভবনে ইকবালের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তাঁর মেয়ে সাবাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ এদিকে, ইকবাল-কন্যার অভিযোগ আজ খারিজ করে দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জিত্ শীল৷ গার্ডেনরিচকাণ্ডে ইকবাল ধরা পড়ার পর থেকেই তাঁর ও তাঁর মেয়ের দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জিত শীলই ঘটনার দিন তাঁকে হরিমোহন ঘোষ কলেজের সামনে ডেকেছিলেন৷ ইকবাল নিজে থেকে যাননি৷ কিন্তু সোমবার সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন খোদ রঞ্জিত শীলই৷ যদিও এর বেশি এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি তিনি৷
যদিও সিআইডি সূত্রে খবর, রঞ্জিতবাবুকে এবিষয়ে জেরা করা হতে পারে৷ এদিকে, গার্ডেনরিচকাণ্ডের সঙ্গে ইকবাল কতটা সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন, তার উত্তর খুঁজতে ঘটনার দিন হরিমোহন ঘোষ কলেজে মোতায়েন প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকর্মীদের জবানবন্দি রেকর্ড করবে সিআইডি৷ পাশাপাশি এসআই তাপস চৌধুরী খুনের মামলায় অভিযোগকারী পুলিশ কনস্টেবল মিলনকুমার দামকে দিয়ে ইকবালকে শনাক্ত করানো হবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর৷
যদিও এদিন সিআইডির ম্যারাথন জেরার হাত থেকে রক্ষা পান ইকবাল৷ বিকেলে ঘন্টা দুয়েক জেরা করা হয় তাঁকে৷ এদিন সন্ধে ইকবালের সঙ্গে দেখা করতে আইনজীবীকে নিয়ে ভবানী ভবনে যান তাঁর মেয়ে সাবা৷ সিআইডি সূত্রে খবর, ইকবালের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি সাবাকে৷ যদিও মুন্নার শারীরিক অবস্থার কথা তাঁর মেয়েকে জানানো হয়েছে৷ এদিকে নিরাপত্তার কথা ভেবে ইকবালকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য এখনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি৷ ভবানী ভবনেই চিকিত্সক এনে পরীক্ষা করানো হয়৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/34475-2013-03-11-16-34-18
ফের বদলি করা হল গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরে অপসারিত প্রাক্তন নগরপাল রঞ্জিত কুমার পচনন্দাকে। একইসঙ্গে বদলি করা হল আরও ১৩ জন আইপিএসকে। গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরে কলকাতার পুলিস কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পচনন্দাকে। তাঁকে ডিরেক্টর অফ সিকিউরিটি করা হয়। তবে নতুন পদে যোগ না দিয়ে দুমাসের ছুটিতে চলে যান পচনন্দা। এবার তাঁকে আর্মড পুলিসের এডিজি পদে বদলি করা হয়েছে।
নতুন ডিরেক্টর অফ সিকিউরিটি হচ্ছেন বীরেন্দ্র। এডিজি কাউন্টার ইনসারজেন্সি পদে বদলি করা হয়েছে কুন্দনলাল টামটাকে। গঙ্গেশ্বর সিং হচ্ছেন ডিরেক্টর অফ সিভিল ডিফেন্স। নতুন আইজি পশ্চিমাঞ্চল হচ্ছেন সিদ্ধিনাথ গুপ্তা। অধীর শর্মা হচ্ছে এডিজি এবং আইজি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। দুটি জেলার পুলিস সুপারকেও বদলি করা হয়েছে। প্রসুন ব্যানার্জি হচ্ছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের নতুন পুলিস সুপার। মালদা জেলার নতুন পুলিস সুপার হচ্ছে কল্যাণ মুখোপাধ্যায়।
আগামিকাল পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডে সাক্ষ্য নেওয়া হবে অভিযোগকারিণীর। নজিরবিহীন গোপনীয়তায় গত দোসরা মার্চ থেকে শুরু হয়েছে পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের শুনানি। ব্যাঙ্কশাল আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক থার্ড কোর্টের বিচারকের নির্দেশ, শুনানি চলাকালীন আইনজীবী ছাড়া আদালতকক্ষে উপস্থিত থাকতে পারবেন না কেউই।
গত দোসরা মার্চ থেকে শুরু হয়েছে পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের শুনানি। ওইদিনই ব্যাঙ্কশাল আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক থার্ড কোর্টের বিচারক এই মামলায় রুদ্ধদ্বার শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানি চলাকালীন একমাত্র আইনজীবী ছাড়া আদালতকক্ষে আর কেউই উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এমনকী কোর্ট রুমে উপস্থিত থাকতে পারবেন না অভিযোগকারিণী কিম্বা অভিযুক্তদের পরিবারের কোনও সদস্যও । পার্কস্ট্রিট কাণ্ডে ফরেন্সিক রিপোর্ট জমা না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারক। দ্রুত ফরেন্সিক রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কেন ডিন মনোনয়নে ভূমিকা নেই উপাচার্যের? কেন ২ বছর ধরে ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল নেই বিশ্ববিদ্যলয়ে? সরকারি নীতির বিরুদ্ধেই প্রশ্ন তুললেন এই সরকারের আমলে নিযুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য৷ কার্যত সরকারকে একহাত নিয়ে বললেন, শুধু ক্যাম্পাস নয়, যেখানে সিদ্ধান্ত হয় সেখানেও রাজনীতি থাকা উচিত নয়৷
একটা সময় ছিল, যখন তত্কালীন সিপিএমের চক্ষুশূল হয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সন্তোষ ভট্টাচার্য৷ ফলে তাঁকে কোনও কাজ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ কিন্তু তত্কালীন সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তিনি, বাড়িতে বসেও চালিয়ে গিয়েছেন কাজ৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময়ে যিনি নিযুক্ত হয়েছেন, সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই এবার সরব সরকারি নীতির প্রকাশ্য সমালোচনায়৷
একটা সময় শাসক দলের অনুগত না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে পারতেন না কেউ, এমন অভিযোগ শোনা যায় আখচার৷ এখন উপাচার্য নিয়োগ হয় সার্চ কমিটি মারফত্৷ তখন সরকারি নীতির সমালোচনার রেওয়াজই কার্যত ছিল না৷ সেখানে ব্যতিক্রম যাদব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্য৷
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে যখন আন্দোলন চলছে, তখন সেই ক্যাম্পাসেই 'শিক্ষা প্রাঙ্গণে রাজনীতি' শীর্ষক আলোচনা সভা৷ উপস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং শিক্ষাবিদেরা৷ সেখানেই বক্তৃতা করতে গিয়ে সরকারি নীতিকে একহাত নেন উপাচার্য৷ তাঁর প্রশ্ন, কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন নেই ২ বছর? কেন নেই ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল? এসব নিয়ে কটা সেমিনার হয়েছে? উপাচার্যের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য, চারিদিকে, অসহিষ্ণুতা বা অযাচিত ঘটনা বাড়ছে৷ রাজনীতি শুধু ক্যাম্পাসে নয়, সিদ্ধান্তের আঁতুড়ঘরেও রাজনীতি থাকা উচিত নয়৷
সন্তোষ ভট্টাচার্যের প্রেক্ষিত ছিল আলাদা৷ বর্তমানে প্রকাশ্যে এমন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন৷ সরকারের নিয়োগ করা উপাচার্যের এই মন্তব্যে কার্যত বিড়ম্বনায় সরকার পন্থীরা৷ সভায় উপস্থিত উচ্চ শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মার্জিতের সাফাই, রাজ্যে গণতন্ত্র আছে, তাই কোনও দল থেকে জেনে আসতে হয়না কী বলতে হবে৷
কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?
তাঁরা মনে করছেন, সমালোচনার এই ট্রেন্ড-এর মূল কারণ সার্চ কমিটি মারফত উপাচার্য নিয়োগ৷ কারণ, তার ফলেই প্রকাশ পাচ্ছে ব্যক্তিস্বত্তা৷ যাদবপুরের উপাচার্যের এই নজিরবিহীর সমালোচনা সেই ব্যক্তিস্বত্তারই প্রকাশ৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/34501-2013-03-12-15-04-05
কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি দলের কিছু সাংসদ-বিধায়কের আচরণে রুষ্ট? শনিবার টাউন হলে সূর্য সেন মার্কেট অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ার অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে তিনি যেভাবে দলীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধায়ক-কাউন্সিলর স্মিতা বক্সিকে সতর্ক করলেন, তাতে এই প্রশ্ন ঘিরেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে৷ গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর হাতের কাছে থাকায় রোষানলে পড়েন দু'জনেই৷ তবে আক্রমণের লক্ষ্য যে ব্যক্তি স্মিতা নন, মুখ্যমন্ত্রী তা স্পষ্ট করে দেওয়ায় স্বভাবতই সুদীপই এখন জল্পনার কেন্দ্রে৷ নির্বাচনে জিতে এলাকার মানুষকে ভুলে যাওয়ার অভিযোগ নতুন কিছু নয়৷ সুদীপের বিরুদ্ধেও কি একই অভিযোগ মমতার? মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য থেকে অন্তত পরিষ্কার, তাঁর অধিকাংশ সময় দিল্লিতে কাটানোটা ভালোভাবে নিচ্ছেন না তিনি। সুদীপের ভূমিকায় তিনি আদৌ সন্তুষ্ট নন৷ নাম করেই তিনি বলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনাদের একটু কাজ করতে হবে৷ শুধু দিল্লিতে থাকলেই তো হবে না৷এই কাজটাও করতে হবে৷
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে দিল্লিতে বেশি সময় দেওয়াটাই স্বাভাবিক৷ যদিও ব্যতিক্রম ছিলেন মুকুল রায়৷ রেলমন্ত্রী হয়েও বেশিরভাগ সময়েই তাঁকে দেখা যেত তৃণমূলনেত্রীর পাশেই৷ মন্ত্রিত্ব থেকে এখন দূরে তৃণমূল সাংসদরা৷ তবুও অধিকাংশকেই রাজ্য রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে দেখা যায় না৷ অভিযোগ রয়েছে অনেক বিধায়কের বিরুদ্ধেও৷ এলাকার মানুষের সমস্যা নিয়ে তাঁরা যতটা না তত্পর, তার থেকে অনেক বেশি তত্পর নিজেদের কেরিয়ার গোছাতে, যা নজর এড়ায়নি মুখ্যমন্ত্রীর৷ স্মিতা বক্সিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, শুধু ওপরের দিকে তাকালে হবে না নীচের দিকেও তাকাতে হবে।
এদিন টাউন হলে সূর্য সেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হল৷ এই অনুষ্ঠানেই বাজারগুলির নিরাপত্তা নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পুর কমিশনার খলিল আহমেদকে, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে নিয়ে বাজারগুলির নিরাপত্তার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে টাস্ক ফোর্স তৈরি করতে নির্দেশ দেন তিনি৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/34418-2013-03-10-09-09-16
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক মুকুল রায়ের বেনজির আক্রমণের পর উল্টো সুর পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের৷ বললেন, আইন মেনেই পরামর্শ দিচ্ছে কমিশন৷ এদিকে, মুকুল রায়ের সমালোচনা সরব কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী৷ সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করল বিজেপি৷
ক' দফায় হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন? কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে কিনা, তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নজিরবিহীন সংঘাত রাজ্য সরকারের৷ এরই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনকে রবিবার তীব্র আক্রমণ করেন মুকুল রায়। তিনি অভিযোগ করেন, সিপিএমের হার ঠেকাতেই পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে দিচ্ছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে। তিনি বলেন, যেহেতু মীরা পান্ডের নিয়োগ বাম আমলে হয়েছিল, সেজন্যই তিনি সিপিএমকে সুবিধা দিতে চাইছেন। মুকুল রায় কমিশনের সচিবের সঙ্গে সিপিএম নেতাদের ঘনিষ্টতারও অভিযোগ আনেন।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে মুকুল রায়ের এই আক্রমণের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এমকে নারায়ণন৷সোমবার দক্ষিণ কলকাতায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বলেন, "সাংবিধানিক দ্বায়িত্বে আছেন, এমন কারও সম্পর্কে এ ধরনের অসহিষ্ণু মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।"
মুকুলের উল্টো সুর শোনা গেল সুব্রতর গলায়৷ বললেন, আইনমাফিকই সুপারিশ, মতামত দিয়েছেন কমিশনার। কমিশনারের চিঠির জবাব দু-এক দিনের মধ্যে দেওয়া হবে জানিয়ে সুব্রত বলেছেন, বাজেট পাশ হয়ে যাওয়ার পরই রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করবে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে।
তবে কি অস্বস্তিতে পড়ে সুর নরম পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে৷
এদিকে, রাজ্যপালের পথেই হেঁটে মুকুল রায়ের তীব্র সমালোচনা কংগ্রেসের৷ কংগ্রেস মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরী ও অধীর চৌধুরীর সমালোচনা থেকে বাদ গেলেন না খোদ মুখ্যমন্ত্রীও৷
এদিকে, মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনাররের সঙ্গে দেখা করে সরকারের ওপর আরও চাপ বাড়াল বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব৷ মীরা পাণ্ডেকে সমর্থন করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ পঞ্চায়েত নির্বাচন নূন্যতম তিনদফায় করার দাবি জানিয়েছেন৷
সংবিধান রক্ষার প্রশ্নে রাজ্যপালের পর রাজ্য সরকারের ওপর কংগ্রেস ও বিজেপি-র জোড়া আক্রমণ আরও বাড়বে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/34499-2013-03-12-14-09-31
উ ন্নয়নের গল্পে আসি এবার।
একশো দিনের কাজে রাজ্যের অবস্থা যে শোচনীয় বিধানসভায় পেশ করা এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে এই প্রকল্পে কর্ম দিবসের সংখ্যা গত দুবছরে বাম জমানার তুলনায় নেমে গেছে।
সোমবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করে রাজ্যে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, প্রত্যেকেই এই কাজে রাজ্যের পারফরম্যান্সকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন। কিন্তু, বিধানসভায় পেশ করা পঞ্চায়েত দফতরের রিপোর্ট, একেবারে উল্টো তথ্য দিচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, একশো দিনের প্রকল্পে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মাপকাঠি হল কর্মদিবস তৈরি। ২০১১-১২ এই আর্থিক বছরে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ হয়েছে মাত্র ৩৩ দিন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, একশো দিনের কাজে গতি আনতে সরকার অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে কাজ করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০১১-১২ আর্থিক বছরে ৩৩ দিনের বেশি কর্মদিবস তৈরি করা যায়নি।
বিধানসভায় পেশ করা রাজ্য সরকারের এই তথ্যেও কিছুটা গরমিল পাওয়া যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের একশো দিনের কাজ সংক্রান্ত যে ওয়েবসাইট রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ২০১১-১২ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গে কর্মদিবস তৈরি হয়েছে ২৬ টি। পরিকল্পনা ছিল ৩৩ দিন কর্মদিবস তৈরি করার।
২০০৯-১০ আর্থিক বছরে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ হয়েছিল ৪৫ দিন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখেই কি সরকার একশো দিনের কাজ নিয়ে ব্যর্থতার দিকটি ঢেকে রাখতে চাইছে?
২০১২-১৩ আর্থিক বছরে একাধিক সরকারি দফতরই খরচ করে উঠতে পারেনি বাজেট বরাদ্দ টাকা। তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা বেশ কয়েকটি দফতরও। তবে অর্থমন্ত্রীর দাবি, চরম সঙ্কটেও বরাদ্দে কোনও কসুর করেনি তাঁর দফতর। তা সত্ত্বেও কেন এই দফতরগুলি বরাদ্দ বাজেট খরচ করতে পারলো না, সেবিষয়ে এবার কৈফিয়ত্ তলব করেছে অর্থ দফতর।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ।
কিন্তু সরকারের কাজের রিপোর্ট কার্ড বলছে অন্য কথা। তথ্য বলছে, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে অধিকাংশ দফতরই খরচ করতে পারেনি তাদের বাজেট বরাদ্দের টাকা। আর সেই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা একাধিক দফতরও। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই খতিয়ান।
স্বাস্থ্য দফতর-- বাজেট বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৯ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে মাত্র ৮০৪ কোটি টাকা।
তথ্য সম্প্রচার দফতর-- বরাদ্দ ছিল ১১০ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর-- বরাদ্দ ছিল ৫৭০ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৫৪৯ কোটি টাকা।
ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর-- বরাদ্দ করা হয়েছিল ৭৫ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৫৬ কোটি টাকা।
স্বরাষ্ট দফতর-- বরাদ্দ ছিল ১৪৩ কোটি টাকা। খরচ করা হয়েছে ১৪১ কোটি টাকা।
মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা পার্বত্য বিষয়ক দফতরেই একমাত্র খরচ করেছে বরাদ্দ বাজেটের থেকে বাড়তি টাকা। বরাদ্দ ছিল ১১৮ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ২১৪ কোটি টাকা।
তবে শুধুই মুখ্যমন্ত্রীর দফতর নয়। আরও বেশ কিছু দফতরেই খরচ হয়নি বাজেটে প্রাপ্ত টাকা।
সেচ দফতর-- ধার্য করা হয়েছিল ১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে মাত্র ৯০৩ কোটি টাকা।
পরিবহণ দফতর-- ৩৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও খরচ হয়েছে ২১০ কোটি টাকা।
শিল্প দফতর-- বরাদ্দ ছিল ৮৬৭ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৮২৩ কোটি টাকা।
তবে বাজেট বরাদ্দকে ছাপিয়ে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে পঞ্চায়েত দফতর। ২৭১৬
কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ থাকলেও এই দফতরে খরচ হয়েছে ৩৯৪৫ কোটি টাকা।
স্কুল শিক্ষা দফতরের ক্ষেত্রেও ২০১৩ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ছিল। খরচ হয়েছে
২৮৮৮ কোটি টাকা।
| ||||||||||||||||||
যুব উৎসাহ প্রকল্প। এ বারের রাজ্য বাজেটে বেকার ভাতা দেওয়ার নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন অথর্মন্ত্রী অমিত মিত্র। ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সি এবং অষ্টম মান পাশ করা বেকাররা রাজ্য সরকারের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম তোলালেই পাবেন মাসিক দেড় হাজার টাকা। তবে সকলেই নয়, রাজ্যের নথিভুক্ত এক কোটি বেকারের মধ্যে ১ লক্ষ জনকে বেছে নিয়ে এই প্রকল্প চলবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। এর ফলে সরকারের মাসে ১৫ কোটি অর্থাৎ বছরে ১৮০ কোটি টাকা খরচ হবে। যা দান-খয়রাতির তালিকায় নবতম সংযোজন। এই বেকার ভাতা প্রাপকের সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই এক লক্ষ বেকার বাছাইয়ের মাপকাঠি কী, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অর্থমমন্ত্রী অবশ্য কোনও ব্যাখ্যাই দেননি। আরও একটি প্রশ্ন থাকছে। তা হল, যে এক লক্ষ বেকার এই ভাতা পাবেন, ধরা যাক তাঁদের একটা অংশ চাকরি পেয়ে গেলেন। প্রশ্ন উঠছে, তখন কি ভাতা প্রাপকের সংখ্যা এক লক্ষের কম হবে? সরকারের একটি সূত্রের বক্তব্য, ভাতা প্রাপকের সংখ্যাটা এক লক্ষই থাকবে। যাঁরা চাকরি পেয়ে যাবেন, তাঁদের নাম ভাতা প্রাপকের তালিকা থেকে বাদ গিয়ে সেখানে নতুন বেকারের নাম ঢুকবে। এ ভাবেই চলবে পুরো প্রক্রিয়া। সরকারের এক কর্তার সরস মন্তব্য, "এ পুরো ওয়াটার অফ ইন্ডিয়া!" চলতি আর্থিক বছরেই খয়রাতির একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার যে নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে, তাতে সরকারের প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। শিল্পী-গায়ক-গায়িকাদের নানাবিধ পুরস্কারে গলেছে কয়েক কোটি। বিধায়কদের সুপারিশ মেনে প্রায় ১৬০০ ক্লাবের জন্য সরকার পরিকল্পনা খাত থেকেই খরচ করেছে ৪০ কোটি টাকা। সম্প্রতি রাজ্যের সবক'টি ব্লকের অসংখ্য ক্লাবের ক্যারম বোর্ড, ক্রিকেট ব্যাট-সহ নানা ক্রীড়া সরঞ্জাম কেনার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া উৎসব অনুষ্ঠানের লাগামছাড়া খরচ তো রয়েইছে। তারই সূত্র ধরে পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে বেকারদের জন্য খয়রাতির নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন অমিত মিত্র। এতেই স্পষ্ট, সরকারের আয় বাড়লেও স্থায়ী সম্পদ তৈরির দিকে বিশেষ নজর নেই মহাকরণের। | ||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||
২০১২-১৩ সালের বাজেট প্রস্তাবে সরকার ১৬ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা মূলধন খাতে অর্থাৎ স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে বরাদ্দ করেছিল। পরবর্তী কালে সংশোধিত ব্যয় বরাদ্দে সেই টাকার পরিমাণ কমিয়ে ১৫ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা করা হয়। কারণ, এই খাতের খরচ কমিয়েই করা হয়েছে দান-খয়রাতি! ২০১৩-১৪ সালের বাজেটে সরকার মূলধন খাতে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও অর্থ দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এ বারেও বছর শেষে বরাদ্দ কমবে। সরকারি কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে পরিকল্পনা খাতে ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল। বাস্তবে খরচ হয়েছে মাত্র ৩৫ শতাংশ! এ বারেও বাজেটে পরিকল্পনা খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু অর্থ দফতরের কর্তারাই বলছেন, এটা আসলে লোক দেখানো বরাদ্দ। শেষ পর্যন্ত অনেক দফতরই অর্ধেক টাকাও খরচ করতে পারবে না। স্থায়ী সম্পদ তৈরির প্রশ্নে সরকারের যখন এমন মনোভাব, তখন পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে চলতি আর্থিক বছরে যে টাকা ধরা হয়েছিল, তার থেকে অন্তত ৪০০ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ সরকারের খরচের অভিমুখ দান-খয়রাতির দিকেই! অর্থ দফতরের কর্তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এ বারও বাজেটে যে সব প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে, তাতে পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে খরচ আরও বাড়বে। ফলে সরকারকে এক দিকে যেমন নিজস্ব কর আদায়ের উপর জোর দিতে হবে, তেমনই বাজার থেকে নেওয়া ঋণের উপরও ভরসা বাড়াতে হবে। সেই কারণেই বাজার থেকে ২১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা ধার নেওয়ার কথাও এ বারের বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। এই পুরো অর্থ বাজার থেকে তোলা হলে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। সীমাহীন খরচের কারণেই ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রোজগারের পরেও সরকারের রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, "সে তো হবেই! মুখ্যমন্ত্রীর যা মনে হচ্ছে, খয়রাতির ঘোষণা করে দিচ্ছেন। তার পর অর্থমন্ত্রীর কাজ হচ্ছে টাকা জোটানো। ফলে রাজস্ব ঘাটতি বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।" অর্থনীতিবিদদের অভিযোগও একই। http://www.anandabazar.com/12raj-budget3.html
|
ওয়াকিবহল মহলের মতে, এর ফলে চাল, ডালের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি খাদ্য সামগ্রী এবং সোনা রূপো বাদে আর সব পণ্যেরই দাম বাড়বে৷ গত বছর ভ্যাট বৃদ্ধির পরিবর্তে পণ্য মূল্যের উপর এক শতাংশ হারে পণ্য প্রবেশ কর চাপিয়েছিলেন অমিতবাবু৷ বণিক মহলের আপত্তি সত্ত্বেও তা বহাল রাখা হয়েছে৷ ফলে পণ্যের দাম অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা৷ আলাদা করে পাঁচ শতাংশ কর বৃদ্ধি করা হয়েছে তামাকজাত পণ্য এবং সিগারেটে৷ তবে কর বৃদ্ধির ফলে সরকারের আয় কতটা বাড়বে অর্থমন্ত্রী তা স্পষ্ট করেননি৷ কিন্তু বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলতে হলে সরকারের আয় বৃদ্ধি যে অবশ্যম্ভাবী এবং কর বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনও ম্যাজিক তার জানা নেই, অবশেষে মা-মাটি-মানুষের সরকারের কর্ত্রী তা মেনে নিলেন, যা মমতার নীতি, রাজনীতিতে মস্ত 'পরিবর্তন' বলা যায়৷ কাকতালীয় হলেও সত্যি তৃণমূলের সংস্কৃতি মেনে ভাষণে এই বাজেট কৃতিত্ব দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দিয়েছেন অমিতবাবু৷ ভাষণের তৃতীয় লাইনটিই হল, 'মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এই রাজ্যে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের জোয়ার এসেছে৷' আর বাজেট বক্তৃতার শেষে মুখ্যমন্ত্রীর চেম্বারে ঢুকে দলনেত্রীর উদ্দেশ্যে অমিতবাবুর সবিনয় নিবেদন, 'আপনি যে বাজেট করলেন তা প্রশংসীয়৷' জবাবে মমতা বলেন, 'এর কৃতিত্ব আপনার৷ এ তো মরুভূমিতে সবুজায়নের চেষ্টা৷'
বাজেটে চমকপ্রদ ঘোষণা হল, বেকারদের মাসে ১৫০০ টাকা করে ভাতা প্রদান৷ এছাড়া আকর্ষনীয় যে তিনটি ঘোষণা আছে, গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী তা জানিয়ে দিয়েছিলেন৷ তার একটি হল দুঃস্থ মেয়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদানে কন্যাশ্রী প্রকল্প৷ এছাড়া লোক পরিষেবা বিল এবং উচ্চ শিক্ষায় ওবিসিদের জন্য আসন সংরক্ষণ৷ মুখ্যমন্ত্রী মাস ছয়েক আগে থেকেই বলে আসছেন, প্রতিশ্রীতির ৯০ ভাগ কাজই তাঁর সরকার করে ফেলেছে৷ এদিন অমিতবাবুর বাজেট বক্তৃতা যেন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সরকারি ঘোষণাপত্র৷ অমিতবাবু দপ্তরওয়ারি যে বরাদ্দ ঘোষণা করেছেন তাতে সরকার এই ২২ মাসে কী করেছে, তার ফিরিস্তি রয়েছে৷ কী করবে সেই ঘোষণা প্রায় নেই৷
সব ঠিক ঠাক চললে আগামী মাসেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট৷ সেই কারণেই বাজেটে বেশ কিছু গ্রামমুখী ঘোষণা রয়েছে৷ যেমন একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ এই প্রকল্প কেন্দ্রের হলেও তা কার্যকর করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের৷ এছাড়াও ইন্দিরা আবাস যোজনা, গীতাঞ্জলী, অধিকার প্রভৃতি আবাস যোজনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের পরিকল্পনা খাতে ২ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন অমিতবাবু৷ সেচ, কৃষি, কৃষি বিপণন, প্রণী সম্পদ এবং মত্স্য চাষের মতো গ্রামীণ কর্মসূচিতে বরাদ্দ অনেকটা বাড়ানো হয়েছে৷ এছাড়া রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুতের মতো পরিকাঠামো এবং স্কুল, হাসপাতাল সহ সমাজিক পরিকাঠামোয় বরাদ্দ অনেকটা বাড়িয়েছেন অমিতবাবু৷ সংখ্যলঘু ভোট ব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেকথা মাথায় রেখে অমিতবাবু সংখ্যলঘু ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিষয়ক দপ্তরের বরাদ্দ অনেকটা বাড়িয়ে ৮৫৯ কোটি টাকা করেছেন৷
এই সরকারের জমানায় শিল্পায়ন থমকে গিয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ৷ অমিতবাবুর বাজেট বক্তৃতায় বৃহত্ ও মাঝারি শিল্পের জন্য নতুন কোনও ঘোষণাই নেই৷ শিল্প মহল আশা করেছিল বাজেটেই সরকার শিল্প উত্সাহ প্রকল্প ঘোষণা করবে৷ অর্থমন্ত্রী তাঁদের হতাশ করেছেন৷
গত দুটি বাজেটে কেন্দ্রের বঞ্চনা এবং বাম জমানার অপশাসন নিয়ে সরব হয়েছিলেন অমিতবাবু৷ এবার সমালোচনার সুর ততটা চড়া নয়৷ তবে হতাশা ব্যাক্ত করেননি৷ বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই তিনি বলেছেন, অর্থসঙ্কট থেকে রেহাই পেতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ন'বার বসেছি৷ কিন্তু লাভ হয়নি৷ এক জায়গায় নাম করেই সিপিএমের সমালোচনা করেছেন৷
|
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে সংঘাতের আবহেই পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী৷ ৩ দিনের সফরে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমেই নাম না করে কড়া বার্তা ছুড়ে দিলেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গদের উদ্দেশে৷ বললেন, পাহাড়ে কেউ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন করতে চাইলে মানুষ তা সহ্য করবে না৷
এরপর বিমানবন্দর থেকে মুখ্যমন্ত্রী সোজা চলে যান মোর্চার শক্ত ঘাঁটি কালিম্পং-এর মংপং-এ৷ অন্যান্য প্রশাসনিক শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে সেখানে ছিলেন দার্জিলিং রেঞ্জের ডিআইজি দময়ন্তী সেনও৷ পার্ক স্ট্রিটকাণ্ডের পর ফের মুখোমুখি মমতা-দময়ন্তী৷ কথাও হয় দু'জনের মধ্যে৷
এদিন বিকেলে মংপঙের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে৷ মংপং পুলিশ ফাঁড়িকে থানায় রূপান্তরিত করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
বুধবার মালবাজারের লাটাগুড়িতে সভা মুখ্যমন্ত্রীর৷ সেখানে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় জয়ীদের পুরস্কার দেবেন তিনি৷ পাশাপাশি,চা বাগানের বেশ কিছু শ্রমিক পরিবারের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেবেন৷ এছাড়াও স্বনির্ভর প্রকল্পে ঋণদান করবেন৷ বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা৷
পঞ্চায়েত ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে দলীয় সংগঠন মজবুত করতেও উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সম্প্রতি তরাই-ডুয়ার্সের বেশ কিছু মোর্চা নেতা তৃণমূলের যোগ দেন৷ তাঁদের সঙ্গেও বৈঠক করেত পারেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিকে, এদিন রাতেই মালবাজারে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুকুল রায়৷
একদিকে উন্নয়নের বার্তা পাহাড়বাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া, অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় সংগঠন মজবুত করা, এই জোড়া লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ফের পাহাড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/34504-2013-03-12-15-39-00
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের আগের দিন এতে বিব্রত হয়েছে প্রশাসন৷ তার উপর সরকারের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে সোমবার বাজেট বক্তৃতাও বয়কট করেছেন মোর্চা বিধায়করা৷ চলতি অধিবেশনেই আর বিধানসভামুখী হবেন না তাঁরা৷ মোর্চার এই অবস্থানে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও, এর পিছনে কংগ্রেসের উসকানির অভিযোগ আবার তুলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব৷
রাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে পাহাড়ে ঘোষিত দু'দফায় ৯৬ ঘণ্টার বনধ ও টানা ১৯ দিন সরকারি অফিসে অবরোধের কর্মসূচি তুলে নিয়েছেন মোর্চা নেতৃত্ব৷ কিন্তু অবরোধ না করেও, সরকারি অফিসে বিক্ষোভের কর্মসূচি বহাল রাখলেন তাঁরা৷ যদিও আগে ঘোষণা থাকলেও, বিক্ষোভ থেকে বাদ রাখা হয়েছে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসগুলিকে৷ সোমবার দুপুরের বিরতির সময় জিটিএ এলাকায় সমস্ত সরকারি অফিসে ওই বিক্ষোভ হয়েছে৷ বাদ পড়েনি মহকুমাশাসকদের দপ্তরও৷
তাতে গোর্খাল্যান্ডের দাবি তোলা ছাড়াও, রাজ্য সরকারের ভূমিকার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সরকারি কর্মচারীরা৷ মোর্চা প্রভাবিত জনমুক্তি কর্মচারী সংগঠনের নেতা শেরিং লামা বলেন, 'দার্জিলিঙের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য জিটিএ গঠন করা হলেও, রাজ্য সরকার তার প্রতিপদে হস্তক্ষেপ করছে৷ বেশ কিছু দপ্তর হস্তান্তর করতে এখনও গড়িমসি করছে৷ এতে উন্নয়নের গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে৷ তাছাড়া গোর্খাল্যান্ড আমাদের চরম লক্ষ্য৷ তাই দু'টো বিষয় নিয়ে প্রচার করতেই আমাদের এই কর্মসূচি৷'
অন্য দিকে সোমবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট পেশের সময় হাজির ছিলেন না মোর্চার কোনও বিধায়কই৷ অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা বয়কট করার জন্যই তাঁরা এ বার বিধানসভায় গরহাজির ছিলেন বলে জানিয়েছেন মোর্চার কার্শিয়াঙের বিধায়ক রোহিত শর্মা৷ তিনি বলেন, 'দলের হাইকমান্ডের নির্দেশেই আমরা বাজেট অধিবেশন বয়কট করছি৷ রাজ্য সরকার আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছে, এই বয়কট তার প্রতিবাদ৷'
এ ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, 'কেউ যদি ঠিক করেন বাজেট অধিবেশন বয়কট করবেন, তাহলে আমরা কী করতে পারি? এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না৷ কিন্তু তৃণমূল বাংলার অখণ্ডতার সঙ্গে কোনও আপোস করবে না৷' কংগ্রেসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'কংগ্রেসের কিছুনেতা-নেত্রী এখন ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন৷ একটা লোকসভা আসনের জন্য কংগ্রেস এখন বিমল গুরুংকে খুশি করতে চাইছে৷ কিন্তু তৃণমূলের কাছে দলের চেয়ে রাজ্যের স্বার্থ আগে৷'
মমতার নির্দেশেই ঢালাও লাইসেন্স, বলছেন শোভনের পুরসভা
বেজায় বিপাকে কলকাতা পুরসভার কর্তারা৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করতে গিয়েই কি না পড়তে হল মুখ্যমন্ত্রীর কোপে! মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই অগ্নিবিধি শিকেয় তুলে ঢালাও ট্রেড লাইসেন্স বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুরকর্তারা৷ শিয়ালদহের সূর্য সেন মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের পর সেই মুখ্যমন্ত্রীই ট্রেড লাইসেন্স বিলি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন পুরসভার৷ গত শনিবার টাউন হলে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে না দেখেই টাকার বিনিময়ে পুরসভা ট্রেড লাইসেন্স বিলি করছে৷ তার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটছে৷
পুরসভার আধিকারিকদের কিন্তু দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাপূরণ করতে গিয়েই ট্রেড লাইসেন্স বিলির ক্ষেত্রে অগ্নিসুরক্ষা বিধি শিথিল করতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা৷ রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেই বিধি না-মানা বাজার বা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও যাচ্ছে না৷ সুরক্ষার থেকেও ব্যবসায়ীদের রুটি-রুজির প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই৷
কয়েক মাস আগে মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের এক প্রতিনিধিদল৷ তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ করেন, পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স পেতে 'সমস্যা' হচ্ছে৷ 'কঠোর' অগ্নিসুরক্ষা বিধির জন্য অনেক ব্যবসায়ী ট্রেড লাইসেন্সও নবীকরণ করাতে পারছেন না বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করা হয়৷ তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পুর-কমিশনার খলিল আহমেদের কাছে কৈফিয়ত্ তলব করেন৷ ট্রেড লাইসেন্স পেতে ব্যবসায়ীদের কেন দেরি হচ্ছে, কমিশনারের কাছে তার জবাবদিহি চান মুখ্যমন্ত্রী৷ তার পরেই পুরসভা নিয়মনীতি বিসর্জন দিয়ে ঢালাও লাইসেন্স বিলির সিদ্ধান্ত নেয়৷ ঠিক হয়, সামান্য কিছু শর্ত মানলেই লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া হবে৷ সব ক্ষেত্রে দমকলের অনুমতিও লাগবে না৷ ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণের জন্য ব্যবসায়ীদের পুরভবনে আসারও দরকার পড়বে না৷ পুরসভাই শহরের বিভিন্ন বাজারে শিবির বসাবে৷ এত দিন ব্যবসায়ীদের ফি-বছর ট্রেড লাইন্সে নবীকরণ করাতে হত৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এমনকী লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছরও করে দেওয়া হয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণের মেয়াদও ২০১২-র জুলাই থেকে বাড়িয়ে ২০১৩-র মার্চ করা হয়৷
এর ফলেও অগ্নিবিধি লঙ্ঘনের আশঙ্কা বেড়েছে বলে মত মার্কেট বিভাগের আধিকারিকদের৷ তাঁদের বক্তব্য, ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ায় মাঝখানে নজরদারির কোনও সুযোগই থাকছে না৷ মধ্যবর্তী সময়ে কেউ নিয়ম ভাঙলে পুরসভার কার্যত কিছু করারই থাকছে না৷ তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগার পর বাণীব্রত বসুর নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি শহরের মোট ৪২টি বাজারকে 'ফায়ার প্রোন' (যেখানে আগুন লাগার আশঙ্কা রয়েছে) ঘোষণা করেছিল৷ সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই সমস্ত বাজারের ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ স্থগিত রেখেছিল পুরসভা৷ বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মানা না হলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু বাস্তবে মাত্র ২৯টি মার্কেট সুপারিশ মেনেছে৷ বাকিরা অগ্নি-পরিকাঠামো গড়ে তোলার কোনও ইচ্ছাই দেখাইনি৷ তাদের ট্রেড লাইসেন্স আটকে রাখা হলেও রাজনৈতিক বাধ্য-বাধকতার কারণেই ব্যবসা বন্ধ করা যায়নি বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা৷
পুর-আধিকারিকদের পাল্টা অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও 'ওপরওয়ালা'র নির্দেশেই নন্দরাম মার্কেটের ব্যবসায়ীদেরও ট্রেড লাইসেন্স দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা৷ নন্দরাম মার্কেটের উদাহরণ সামনে রেখেই শহরের অন্যান্য মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও ট্রেড লাইসেন্সের জন্য চাপ দিচ্ছেন৷ রাজনৈতিক কারণেই সেই চাপের কাছে মাথা নত করতে হচ্ছে পুরসভাকে৷ ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের এক কর্তার আক্ষেপ, 'মুখ্যমন্ত্রী এক দিকে বলছেন, ব্যবসায়ীরা কেন ট্রেড লাইসেন্স পাচ্ছেন না৷ তিনিই আবার অভিযোগ করছেন আমরা নাকি টাকা নিয়ে ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছি৷
এ তো রীতিমতো বিচিত্র অবস্থা!'
এর পরেও ব্যবসায়ীদের সংগঠন 'ফোরাম অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশন'-এর সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলের দাবি, 'অগ্নিবিধি মেনে চলতে হলে ছোট দোকানদারদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে৷ অগ্নিসুরক্ষা বিধি কঠোর করতে গিয়ে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা যেন বিপদে না পড়ে, সেটাও যেন মাথায় রাখা হয়৷' তবে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনার পরে আর ঝুঁকি নিচ্ছেন না মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর বক্তব্য, 'বাজারে যেভাবে একের পর এক আগুন লাগছে এবং মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে, তাতে আমরা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না৷ মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্নে আমাদের কিছুটা কঠোর হতেই হবে৷ অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে না দেখে কোনও বাজারেই আর ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করবে না পুরসভা৷'
আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যুবভারতীতেই হবে। অনুষ্ঠানের জন্য সরে গেল আই লিগের পাঁচটি ম্যাচ। যুবভারতীতে ফুটবলের ভবিষ্যত অন্ধকার বলে মানছেন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। যুবভারতীতেই হবে আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।সরকারিভাবে ঘোষণা হল মঙ্গলবার। উদ্বোধনের কারণে ২১ মার্চ থেকে তিন এপ্রিলের মধ্যে তাকা আইলিগের পাঁচটি ম্যাচ সরে গেল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন থেকে।
কারণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে চলবে তার মহড়া। বাংলার ফুটবলকে কার্যত খুন হতে হল ক্রিকেটের বাণিজ্যিক স্বার্থের হাতে। সপ্তাহ দুয়েক আগে চব্বিশ ঘন্টায় প্রথম খবরটা প্রকাশিত হতেই তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী। শেষপর্যন্ত দেখা গেল আই লিগের ম্যাচকে উপেক্ষা করে সত্যিই তিনি রেড চিলিজকে মাঠ দিয়ে বসে আছেন।
মঙ্গলবার সকালে আইপিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয় যুবভারতীতেই হবে আইপিএলের বোধন।আর সঙ্গে সঙ্গে যুবভারতী থেকে বিসর্জনের বাজনা বাজিয়ে ফেলল ফুটবল। সমালোচনা এড়াতে ক্রীড়ামন্ত্রী অবশ্য ক্লাবগুলোকে পাশে পেতে সচেষ্ট হয়েছেন। আই লিগের ক্লাবগুলোও তাঁর সম্মান রাখতে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে যুবভারতীতে খেলার অনীহার কথা। আপাতত নিজের অবস্থান পরিস্কার করলেও ভবিষ্যতে এই যুবভারতীতেই কীভাবে ফের ক্লাবগুলোকে খেলাবেন, তা ভাবতে হবে ক্রীড়ামন্ত্রীকে।
অসৌজন্যের আবহেই বিরল মিলনমেলা
এ দিন এন্টালির একটি ক্লাবের মাঠে হকির স্টিক হাতে একসঙ্গে সহাস্য উপস্থিতি লক্ষ করা গেল তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সোমেন মিত্র, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম রাজ্য কমিটি'র প্রবীণ সদস্য কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের প্রাক্তন সাংসদ সুধাংশু শীলের৷ ক্রীড়ানুষ্ঠানের ফাঁকে চুটিয়ে আড্ডা দিতেও দেখা গেল তাঁদের৷ এমনকী একে-অন্যের পরিবারের কুশল জানতেও ভুললেন না৷
রাজনীতিকদের এই সামাজিক সমাবেশ অবশ্য শেষ পর্যন্ত রাজনীতিমুক্ত থাকেনি সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নবাণে৷ তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী-সাংসদ পালা করে বলে চলেছেন, 'সিপিএময়ের ছায়া মাড়াবেন না৷' এমনকী বিরোধী দলকে 'বিষধর সাপের' সঙ্গেও তুলনা করে নানা উস্কানিমূলক মন্তব্য করে চলেছেন তাঁরা৷ স্বাভাবিক ভাবেই সোমেনবাবুকে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়, তিনি কি দলীয় সতীর্থদের সঙ্গে সহমত নন? ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদের জবাব, 'আমার দলে কে, কী বলছেন জানি না৷ রাজনীতির জন্য সামাজিক সম্পর্ককে বিসর্জন দেওয়া যায় না৷' সোমেনবাবু কংগ্রেসে ফিরতে পারেন, এই জল্পনা র মধ্যেই প্রদীপবাবুর পাশে তাঁর সহাস্য উপস্থিতি নতুন মাত্রা পেয়েছে৷ প্রদীপবাবু অবশ্য জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, 'রাজনীতি তো পশুরা করে না৷ রাজনীতির জন্য বন্ধুত্ব, সামাজিক সম্পর্ক বিসর্জন দিতে হবে কেন?'
সিপিএমের কান্তিবাবু অবশ্য এই সুযোগে নাম না করে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, 'রাজনীতিকদের পারস্পরিক সম্পর্কে অতীতে কখনও দলতন্ত্র কায়েম হয়নি৷ ইদানীং সেই ঐতিহ্যকে নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে৷'
No comments:
Post a Comment