Total Pageviews

THE HIMALAYAN DISASTER: TRANSNATIONAL DISASTER MANAGEMENT MECHANISM A MUST

We talked with Palash Biswas, an editor for Indian Express in Kolkata today also. He urged that there must a transnational disaster management mechanism to avert such scale disaster in the Himalayas. http://youtu.be/7IzWUpRECJM

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Tuesday, April 30, 2013

সারদা ধাক্কায় বিধানসভায় পেশ নতুন বিল, আপত্তি বামেদের কেন্দ্র দায় চাপাচ্ছে রাজ্যের ঘাড়েই কোম্পানি আইনে বদল আনছে কেন্দ্র লোকসভায় 'সোনিয়াতন্ত্রের' বিস্ফোরক অভিযোগ সুষমার তদন্তের শুরুতেই বিভ্রান্তির শিকার অভিযোগকারীরা গৌতম দেবের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর বেকসুর খালাস সজ্জন কুমার, বিচারককে ছোঁড়া হল জুতো পঞ্চায়েত: সাংবিধানিক সঙ্কট রোধে নরম রাজ্য

সারদা ধাক্কায় বিধানসভায় পেশ নতুন বিল, আপত্তি বামেদের
কেন্দ্র দায় চাপাচ্ছে রাজ্যের ঘাড়েই

কোম্পানি আইনে বদল আনছে কেন্দ্র

লোকসভায় 'সোনিয়াতন্ত্রের' বিস্ফোরক অভিযোগ সুষমার
তদন্তের শুরুতেই বিভ্রান্তির শিকার অভিযোগকারীরা
গৌতম দেবের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর
বেকসুর খালাস সজ্জন কুমার, বিচারককে ছোঁড়া হল জুতো
পঞ্চায়েত: সাংবিধানিক সঙ্কট রোধে নরম রাজ্য

বিধানসভায় নতুন বিল পেশ করলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। এর আগে বাম আমলে আনা বিল প্রত্যাহার করা হয়। বিলটি প্রত্যাহার করার জন্য আলোচনার সময় আজ বিধানসভায় তুমুল হট্টগোল হয়। বিল প্রত্যাহার পদ্ধতির সাংবিধানিক মান্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিরোধিতা করেন বামেরা। বিল প্রত্যাহার নিয়ে ভোটাভুটিও দাবি করা হয় বামেদের তরফে। 

অবশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিল প্রত্যাহার হয়। ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থাকে আটকাতে বামফ্রন্ট সরকারের আমলের বিল প্রত্যাহার করে নতুন বিল পেশ করল রাজ্য সরকার। বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, 'দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটর্স ইন ফিনান্সিয়াল এস্টাব্লিশমেন্টস বিল, ২০১৩' পেশ করেন। বামেদের অভিযোগ প্রতারকদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে রাজ্য সরকার। বামেদের এই অভিযোগ খারিজ করে সরকারের দাবি ভুঁইফোড়দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই নতুন বিল আনা হয়েছে। এই কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্তও দাবি করেছে বামেরা। 

রাজ্য সরকারের আনা এই নতুন বিলকে 'অসাংবিধানিক' বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।


রাজ্যবাসীকে সচেতন করতে মমতা নিজেই পথে নামছেন
এই সময়: সারদা-কাণ্ড ঘিরে গোটা রাজ্য যে আগ্নেয়গিরির উপর বসে রয়েছে, অবশেষে তা বুঝতে পেরে এবার সরাসরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করার কাজ শুরু করে দিল রাজ্য সরকার৷ এর পাশাপাশি এই ইস্যুতে দলের ভাবমূর্তি উদ্ধারে পথে নামছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই জোড়া পদক্ষেপই বুঝিয়ে দিয়েছে, বেআইনি আর্থিক সংস্থা নিয়ে কতটা অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল৷ রবিবার তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী দলের এক সভায় বলেছিলেন, 'আপনারা যে যেখানে টাকা ঢেলেছেন, সব তুলে নিন৷' সোমবার পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রও বর্ধমানে এক সভায় একই আবেদন জানান৷ তবে দলেরও অবস্থান এটাই কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ 

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার জানান, আগামী ২ মে বিকেল ৫ টায় শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে তৃণমূলের জনসভায় মমতাই প্রধান বক্তা৷ বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির সঙ্গে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা-নেত্রীর যোগাযোগের যে অভিযোগ উঠেছে তার প্রেক্ষিতে ৩ মে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে গোটা দলের সমস্ত মাপের নেতাকে এক ছাদের তলায় বসিয়ে কঠোর বার্তা দেবেন তৃণমূলনেত্রী৷ ওই সভায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে৷ সেটা হলে আরও অস্বস্তির মুখে পড়বেন মমতা৷ দলীয় সূত্রের খবর, এরকম কিছু যাতে না ঘটে, তার জন্য শীর্ষ নেতারা তত্‍পর হয়েছেন৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং গৌতম দেবের যুগলবন্দির মোকাবিলায় তাঁদের প্রতিটি জনসভার পাল্টা সভা করার কৌশল নিয়েছিলেন তত্‍কালীন বিরোধী নেত্রী মমতা৷ প্রায় ২৩ মাসের ব্যবধানে চিট ফান্ড ইস্যুতে সংকটে পড়া মমতা সিপিএমের এই দুই শীর্ষ নেতার মোকাবিলায় সেই একই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ স্থির হয়েছে, বুদ্ধবাবুরা যেখানে যেখানে সভা করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার করবেন, সেখানেই পাল্টা সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী৷ রবিবার পানিহাটির অমরাবতী ময়দানে সিপিএমের জনসভায় বুদ্ধ-গৌতম জুটি ফের মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর পরিবার এবং দলের নেতাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আঁতে লেগেছে তৃণমূলের৷ তাই ৪ মে মমতা নিজেই ওই মাঠে জনসভা করে সিপিএমের 'জবাব' দেবেন বলে ঠিক করেছেন৷ 

সারদা-দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার পর থেকে তৃণমূলের অন্দরেও বিস্ময় ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে৷ আড়ালে আবডালে দলের বহু নেতা ও জনপ্রতিনিধি স্বীকার করছেন, তাঁরা বিভ্রান্ত৷ অনেকে আবার অভিযুক্তদের দল থেকে তাড়ানোরও দাবি করেছেন৷ গত দু'সপ্তাহ ধরে দলের প্রথম সারির নেতারা শীর্ষনেত্রীর নির্দেশে ঘনঘন মিটিং মিছিল করেছেন৷ কিন্তু তাতেও বিড়ম্বনা কাটছে না শাসকদলের৷ সামাজিক স্তরে বিক্ষুব্ধ মানুষের জোট দেখে কিছুটা ভয় পেয়েছে শাসকদল৷ তাই মমতা বুঝেছেন, এবার তাঁকেই পথে নামতে হবে৷ 

এদিনই রাজ্যের স্বল্প সঞ্চয় অধিকর্তার তরফে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জনসাধারণকে জানানো হয়েছে, 'অধিক সুদ বা অধিক লোভের আশায় যেখানে সেখানে টাকা জমাবেন না বা যাকে তাকে টাকা দেবেন না৷ আপনার চার পাশে প্রতারক সংস্থা ও তাদের প্রতারক প্রতিনিধি ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ তাদের থেকে সাবধান!' এই বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে একটি লিফলেট বিলি করে সরকারের তরফে আরও বলা হচ্ছে, ডাকঘরে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প এখনও সবার সেরা৷ কোন কোন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদের হার কত, তা-ও ওই লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করছে সরকার৷ 

রাজ্যের স্বল্প সঞ্চয় অধিকর্তা মোবাশ্বের আলি বৈদ্য বলেন, 'সরকারি এই বিজ্ঞপ্তি ও লিফলেট আমরা গ্রামে, গঞ্জে, মফস্সলে বিলি করছি৷ স্টেশনে, বাজার-হাটে আমরা মাইক বাজিয়ে মানুষকে প্রতারক সংস্থায় টাকা রাখা থেকে সাবধান করছি৷ আমাদের আবেদন, সরকারি অনুমোদিত এজেন্ট ছাড়া আর কারও মাধ্যমে টাকা জমাবেন না৷' কিন্তু হঠাত্‍ করে সরকারের এই উদ্যোগ কেন? রাজ্যে বেআইনি লগ্নি সংস্থাগুলির প্রতিপত্তি তো বেশ কয়েক বছর ধরেই৷ এখন সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক প্রতারণা জনসমক্ষে আসার পরেই কি সরকার এগুলির বিরুদ্ধে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? অধিকর্তা বলেন, '২০১১ সাল থেকেই আমরা সরকারি উদ্যোগে এই প্রচারাভিযান চালাচ্ছি৷ তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সামনে আসার পর আমরা অবশ্যই এই প্রচারাভিযান জোরদার করছি৷' 

সরকারের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা ও তাদের প্রতিনিধিদের থেকে মানুষকে সাবধান থাকতে বলে জানানো হয়েছে, 'তারা বেশি সুদ বা বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করে৷ প্রথম প্রথম তারা কিছু টাকা কথামতো ফেরত দেয় বটে, কিন্ত্ত পরে সুযোগ বুঝে বাকি সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়৷ পরে জানতে পারা যায় যে সুদাসলে বেশ কিছু টাকা খোয়া গিয়েছে৷ তখন অনেক মানুষ সরকারের কাছে টাকা আত্মসাত্ ও প্রতারণার অভিযোগ জানায়৷' কিন্তু, দেরিতে খবর পাওয়ায় সরকারের আর কিছু করার থাকে না৷ কারণ প্রতারকরা তত ক্ষণে পালিয়ে যায় বলে বিজ্ঞপ্তিতে সাফাই দেওয়া হয়েছে৷ স্বল্প সঞ্চয় অধিকর্তা জানান, 'এই প্রচারাভিযান ব্যাপক ভাবে রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে সাধারণ মানুষকে কোনও বেআইনি লগ্নি সংস্থার হাতে আর প্রতারিত না হতে হয়৷' 


সামান্য রিসেপসনিষ্ট থেকে কোম্পানির দ্বিতীয় ব্যক্তি৷ সারদা গোষ্ঠীতে দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের উত্থান চমকপ্রদ৷ কিন্তু সারদার প্রাক্তন কর্মীদের একাংশ বলছেন, এই জায়গায় পৌঁছতে দেবযানীকে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি৷ তাঁর কারণ, সুদীপ্ত সেনের মহিলা-প্রীতি৷ নানা সময় নানা মহিলা সুদীপ্ত সেনের কাছাকাছি এসেছেন কিংবা আসার চেষ্টা করেছেন৷ কিন্তু দেবযানী মাত করে দিয়েছেন সকলকেই৷ সুদীপ্তর ধারেকাছে কাউকে ঘেঁষতে দেননি৷ ২০০৮ সালে মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনে সারদায় কাজ শুরু করে দু' বছরের মধ্যে তাঁর বেতন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল এক লক্ষ টাকা৷

সূত্রের খবর, দেবযানীর সঙ্গেই আরও এক তরুণী সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলসে রিসেপশনিষ্ট হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন৷ তিনিও সুদীপ্ত সেনের নজরে পড়েছিলেন, কিন্তু কখনওই দেবযানী হয়ে উঠতে পারেননি৷

দেবযানী সারদায় যোগ দেওয়ার সময় সংস্থায় এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ মহিলা আধিকারিক ছিলেন৷ ধরে নেওয়া যাক তাঁর নাম 'ম'৷ সারদার অনেকেই বলে থাকেন, সংস্থাকে তিলে তিলে গড়ে তুলতে 'ম'-র গভীর অবদান ছিল৷ কিন্তু দেবযানীর প্রতিপত্তি যত বাড়তে থাকে, 'ম'-র প্রভাব সারদায় ততই কমতে থাকে৷ একসময় কোণঠাসা হয়ে পড়ে সংস্থা ছেড়ে দেন 'ম'৷

এরপর আরও এক তরুণী সুদীপ্তর সেনের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন৷ ধরে নেওয়া যাক তাঁর নাম 'প'৷ কিন্তু তাঁর সুদীপ্তর কাছাকাছি যাওয়া ভাল চোখে দেখেননি দেবযানী৷ তাই সামান্য কিছুদিনের মধ্যেই 'প'-এর ট্রান্সফার হয় দেরাদুনে৷  

কিছুদিন আগেই সারদার আরেক সুন্দরী কর্মচারীকে চোখে ধরে সুদীপ্ত সেনের৷ ধরা যাক তাঁর নাম 'ন'৷ 'ন' কিছুদিনের মধ্যেই সুদীপ্ত সেনের নয়নের মণি হয়ে উঠলেও কখনওই দেবযানীর জায়গা নিতে পারেননি৷ খোদ দেবযানীই পুলিশকে একথা জানিয়েছেন৷

সব মিলিয়ে শুরু থেকেই অন্য কাউকে 'ম্যাডাম'-হয়ে উঠতে দেননি দেবযানী৷ অতি যত্নে সুদীপ্ত সেনের পাশের চেয়ারের দখল ধরে রেখেছেন৷

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় দেবযানী জানিয়েছেন, কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য মার্চ মাসে তাঁর কাছ থেকে আট লক্ষ টাকা ধার নেন সুদীপ্ত সেন৷ পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শেষদিন পর্যন্ত সুদীপ্ত সেনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগী হিসাবে থাকলেও শেষের একটি ঘটনায় কিছুটা মনক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন তিনি৷ পুলিশের জাল ক্রমেই এগিয়ে আসছে দেখে দেবযানী যখন আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন সুদীপ্ত সেন তাঁকে বিরত করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ শেষপর্যন্ত পুলিশ দেবযানীকেও গ্রেফতার করে৷ এই ঘটনাই না কি দু'জনের সম্পর্কে কিছুটা চিড় ধরিয়েছে৷ শ্রীঘর-যাপন মেনে নিতে পারছেন না দেবযানী৷ তাই পুলিশের জেরার মুখে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের নিঁখুত বিবরণ অবলীলায় বলে দিচ্ছেন তিনি৷ 

এবিপি আনন্দ
   http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/36200-2013-04-30-15-30-05

কেন্দ্র দায় চাপাচ্ছে রাজ্যের ঘাড়েই

গৌতম হোড় 

নয়াদিল্লি: অনিয়ন্ত্রিত বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলির কোম্পানিগুলির কাজকর্ম সম্পর্কে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দু'জনেই আগে থেকে অবহিত ছিল৷ প্রায় বছরখানেক আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারগুলিকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, এই ধরনের অনিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সমন্বয়ের কাজটা অনেক বাড়াতে হবে৷ অর্থমন্ত্রক সূত্রের খবর, ফিনানশিয়াল স্টেবিলিটি ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল বা এফএসডিসি-র সন্তম বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়৷ সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, কেন্দ্রীয় রেগুলেটর সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ, রাজস্ব দপ্তর, ইডি, আর্থিক অপরাধদমন শাখার সঙ্গে রাজ্য পুলিশ ও রাজ্য সরকারের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়াতে হবে ও তার জন্য রাজ্যস্তরে সমন্বয় কমিটি তৈরি করা হবে৷ এই সিদ্ধান্ত হয় ১৪ জুন৷ তার পর ২০১২ সালের ২৪ জুলাই সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্ত্ত দেখা যাচ্ছে, তার পরেও সারদা-কেলেঙ্কারি আটকানো গেল না৷ 

বেশ কিছু অভিযুক্ত সংস্থার ব্যাপারে রাজ্য স্তরের সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা হয়৷ গত ডিসেম্বরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অর্থমন্ত্রককে জানায়, রোজ ভ্যালি গ্রুপ তাদের আওতায় পড়ে না৷ তা সত্ত্বেও ওই গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে তারা রাজ্যস্তরের কো-অর্ডিনেশন কমিটিতে আলোচনা করেছে৷ ন্যাশনাল হাইজিং ব্যাঙ্ক তার পর রোজ ভ্যালি হাইজিং ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেডের বুক অফ অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে দেখে এবং সেই রিপোর্ট কর্পোরেট মন্ত্রকের কাছেও পাঠানো হয়৷ 

অর্থমন্ত্রকে সেবি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আইনের ফাঁক গলে বেরোনোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশে বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলি অন্য পরিচয়ে নিজেদের নথিভুক্ত করায়৷ তারা টাইম শেয়ার, সোনা কেনার প্রকল্প, আবাসন তৈরির জন্য টাকা সংগ্রহ করা, কৃষিসংক্রান্ত কাজ, এমনকী এমু ফার্মিং, ছাগল পালন করার জন্য এই কোম্পানিগুলি বানিয়েছে বলে জানায়৷ তার পর তারা যখন বাজার থকে চিট ফান্ড কোম্পানির মতো টাকা সংগ্রহ করতে থাকে, তখন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেই তাঁরা আইনি লড়াইয়ে চলে যান৷ এই ভাবেই পূর্ব ভারতে ৫৯টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা চলছে৷ 

পশ্চিমবঙ্গের অভিযুক্ত বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলি নিয়ে তাঁরা কী করছেন, তা অর্থমন্ত্রককে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছে সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেট মন্ত্রক৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক সারদা ছাড়াও রোজ ভ্যালির ১৯টি কোম্পানি, বেসিল, অ্যালকেমিস্ট-সহ মোট ৩১টি কোম্পানির বিরুদ্ধে কোম্পানি আইনের ২৫৬ ধারা অনুযায়ী তদন্ত শুরু হয়েছে৷ কিন্ত্ত ৪২টি কোম্পানির কাছ থেকে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে৷ সেবি-ও সারদা এবং রোজ ভ্যালি, এমপিএস, আইকোর, প্রয়াগ র্যামেল, ভিবজিওর, অ্যালকেমিস্ট, ইউরো, ডিজায়ার অ্যাগ্রো, এনোরমাস ইন্ডাস্ট্রিজ-সহ মোট ২৬টি সংস্থার একাধিক কোম্পানি নিয়ে তদন্ত করছে৷ তাঁদের তদন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ মন্ত্রককে সেবি জানিয়েছে, আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে শুধু তারা নয়, রাজ্য সরকার, রিজর্ভ ব্যাঙ্ক, কর্পোরেট মন্ত্রক-- সকলেরই দায়িত্ব আছে৷ সেবি-র মতে, তাঁদের ক্ষেত্রে অসুবিধা হল, এই কোম্পানিগুলি বহু পর্যায়ের মার্কেটিং স্কিম করবে বলে জানায় এবং এই বিষয়টি সেবির আওতায় পড়ে না৷ 

কোম্পানি আইনে বদল আনছে কেন্দ্র

কোম্পানি আইনে বদল আনছে কেন্দ্র
এই সময়, নয়াদিল্লি: শুধু রাজ্যের আইনই নয়, বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় আইনেও বদল হচ্ছে৷ কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী সচিন পাইলট সোমবার জানিয়ে দিয়েছেন, বেআইনি আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে কোম্পানি আইনে পরিবর্তন করা হয়েছে৷ রাজ্যসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে৷ তদন্ত করার ক্ষেত্রেও এসএফআইও-র ক্ষমতা বাড়ানো হবে৷ পাশাপাশি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সচিন পাইলট জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি সেবি এই কেলেঙ্কারি নিয়ে চার্জশিট দেবে৷ 

সারদা-কেলেঙ্কারির পর এ বার বেআইনি আর্থিক পরিচালিত কাগজ ও চ্যানেল নিয়েও তদন্তে নামল কেন্দ্রীয় সরকার৷ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মনীশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, 'চিট ফান্ড কোম্পানিগুলি যে সব মিডিয়ার মালিক, তাদের ইকুইটি শেয়ারের বিস্তারিত বিবরণ চেয়ে পাঠানো হয়েছে৷ আমরা দেখব, তারা লাইসেন্স নেওয়ার সময় যে তথ্য দিয়েছিল, তার সঙ্গে এই তথ্য মিলছে কি না৷ না-মিললে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব৷' 

তাঁর আর্থিক সংস্থা ডুবে যাওয়ার পিছনে দু'টি বিষয়কে দায়ী করেছেন সুদীপ্ত সেন৷ ক্ষমতাধর লোকেদের প্রচুর পরিমাণ অর্থ দেওয়া ও মিডিয়া ব্যবসায় এসে ভরাডুবি৷ একটা সময় একের পর এক টিভি চ্যানেলের মালিকানা নিয়েছিলেন তিনি৷ বাংলা ও অসমে একাধিক খবরের কাগজও বের করেছেন৷ কাগজগুলি এখন বন্ধ৷ চ্যানেলের অবস্থাও প্রায় তা-ই৷ শুধু সুদীপ্ত সেন নন, আরও প্রচুর আর্থিক সংস্থা মিডিয়ার ব্যবসায় এসেছে৷ কেউ খবরের কাগজ বের করেছে, কেউ বা একাধিক চ্যানেল চালাচ্ছে৷ সবগুলি নিয়েই তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রকের তদন্ত শুরু হয়েছে৷ 

তবে মিডিয়ার ব্যবসাটা সুদীপ্ত সেন বা অন্য বেআইনি আর্থিক সংস্থার মূল ব্যবসা নয়৷ তাঁদের আসল ব্যবসা, অর্থাত্‍ , লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলা নিয়ে এখন তদন্ত করছে কর্পোরেট মন্ত্রক৷ সচিন পাইলট বলেছেন, 'আমরা তদন্ত করছি৷ রাজ্য সরকারও কমিশন করেছে৷ তদন্ত বা অন্য ব্যাপারে আমাদের কাছে রাজ্য সরকার যে সাহায্য চাইবে, আমরা তা দিতে প্রস্তুত৷' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য সোমবার সচিন পাইলটের সঙ্গে কথা বলেন৷ সেখানে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নালিশও করেছেন মন্ত্রী৷ প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, 'সচিন তো সম্প্রতি কলকাতা গিয়ে রাজ্যের ডিজি ও মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত তাঁরা কেউ আসেননি বা তাঁদের আসতে দেওয়া হয়নি৷' 

এখন দেখা যাচ্ছে, বেআইনি আর্থিক সংস্থা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে৷ তাই সচিন বলেছেন, 'আমরা এমন পরিবর্তন আনছি, যাতে এই ধরনের চিট ফান্ডগুলির বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া যায়৷' বর্তমানে আইনি ও বেআইনি সব চিট ফান্ড সংস্থাই প্রথমে রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের কাছে কোম্পানিকে নথিভুক্ত করায়৷ সেই সময় কিন্ত্ত তারা কেউ এ কথা বলে না যে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তারা স্বল্প সঞ্চয়ের জন্য টাকা তুলবে৷ তারা কেউ কৃষি, কেউ প্রোমোটারি, কেউ বা অন্য কোনও ব্যবসা করবে বলে জানায়৷ একবার নথিভুক্ত হয়ে যাওয়ার পর তারা চিট ফান্ড হিসেবে কাজ শুরু করে৷ এ বার কোম্পানিগুলির এই কৌশলের মোকাবিলা করতে আইনকে কঠোর করা হচ্ছে৷ 

সচিন জানিয়েছেন, তদন্তের পাশাপাশি এখন যে কাজটা করতে হবে, তা হল, যে সব সাধারণ মানুষ সর্বস্ব হারিয়েছেন, তাঁরা যাতে সেই টাকা ফিরে পান সেটা দেখা৷ তাঁর কথায় 'বেআইনি চিট ফান্ডগুলি লোককে ঠকাচ্ছে৷ খুব সাধারণ মানুষ প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ তাই তাঁরা যাতে টাকা ফিরে পান, সেই চেষ্টা করতে হবে৷' 


১৯৮৪-এর শিখ বিরোধী দাঙ্গা মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন দিল্লির প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সজ্জন কুমার। সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তিনটি মামলার মধ্যে একটির রায় ঘোষণা ছিল আজ। কারকাডুমার বিশেষ সিবিআই আদালত তাঁকে ১৯৮৪-র দাঙ্গা সংক্রান্ত সেই মামলা থেকে মুক্তি দিল। এই রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আদালত চত্বরে ভিড় করে থাকা বিভিন্ন শিখ সংগঠন গুলির মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা তীব্র প্রতিবাদ জানান এই বিচারের। বিচারক এজলাসের বাইরে বেরিয়ে এলে জনতা আরও উত্তেজত হয়ে পড়েন। এই সময় বিচারকের দিকে জুতো ছুঁড়ে মারেন এক ব্যক্তি। 

দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে `৮৪-এর দাঙ্গায় খুন, ডাকাতি, দাঙ্গা সংগঠিত করা, হিংসায় উস্কানি এবং সাধারণ মানুষের সম্পত্তি নষ্ট করার মত গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে। আজ সব কটি অভিযোগ থেকেই মুক্তি পেলেন তিনি। 

নানাবতী কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে ২০০৫-এ মামলা দায়ের করা হয়। ২০১০-এর জানুয়ারিতে সিবিআই সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে দুটি চার্জশিট পেশ করে। 

গত সপ্তাহে সিবিআই আদালতে দাবি করে ১৯৮৪-এর শিখ বিরোধী দাঙ্গায় সজ্জন কুমারের সঙ্গে পুলিসের চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র ছিল। 

কংগ্রেসের এই প্রাক্তন সংসদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল, দাঙ্গার সময় দিল্লি ক্যানটনমেন্টে সুলতানিপুর অঞ্চলে পরিকল্পিত ভাবে দাঙ্গা সংগঠিত করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় জনতাকে খেপিয়ে তুলে ভয়াবহ হিংসা সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। এই হিংসার বলি হন ছ`জন শিখ ধর্মাবলম্বি সাধারণ মানুষ। 

নিম্ন আদালতে দুটি ভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগও ছিল সজ্জন কুমারের বিরিদ্ধে। 


কয়লা ব্লক কেলেঙ্কারি মামলায় সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। আজ শুনানির সময় সিবিআইয়ের দাখিল করা হলফনামা নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। 

কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত রিপোর্ট আগেই ফাঁস হওয়ার ঘটনাকে গোটা ব্যবস্থার প্রতি চরম বিশ্বাসভঙ্গ বলে মন্তব্য করা হয়েছে ওই শুনানিতে। কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত রিপোর্ট যে আইনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক আমলাকে দেখানো হয়েছিল হলফনামায় এ কথা স্বীকার করে নিয়েছিল সিবিআই। ওই ঘটনায় সিবিআইয়ের ওপর প্রধানমন্ত্রীর দফতর প্রভাব খাটিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট কী প্রতিক্রিয়া দেয় তা জানতে সর্বোচ্চ আদালতের দিকেই নজর ছিল গোটা দেশের।

কয়লা কেলেঙ্কারিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল সংসদের উভয় কক্ষ। লোকসভার কাজকর্ম শুরু হলেই আজ ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি সাংসদরা। তাঁদের হট্টগোলে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করা যায়নি। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার মীরা কুমার। অন্যদিকে, রাজ্যসভাতেও বিরোধীদের বিক্ষোভে কোনও কাজকর্ম করা যায়নি। দুদফায় দুপুর দুটো পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি। 


প্রেসিডেন্সির পর এবার খড়গপুর আইআইটি। তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভের জেরে ব্যাহত পরীক্ষা। আজ সকাল ছটা থেকে আইএনটিটিইউসির নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের মধ্যে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ঠিকাশ্রমিকরা। নেতৃত্বে ছিলেন খড়গপুর ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর রায়। রীতিমতো মাইক বাজিয়ে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে চলে বিক্ষোভ। পরীক্ষার্থী এবং অধ্যাপকদের ছাড় দেওয়া হলেও, পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় অশিক্ষক কর্মীদের। 

যার জেরে দীর্ঘ সময় এমটেকের ভাইভা শুরুই করা যায়নি। রেজিস্ট্রার টি কে ঘোষালের অভিযোগ, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক এবং স্থানীয় থানায় বারবার জানানো হলেও কারও দেখা মেলেনি। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিস আসে। 

অবশেষে আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। শুরু হয় পরীক্ষা। তৃণমূলেরই অন্য অংশ অবশ্য মনে করে, এভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে বিক্ষোভ দেখানো উচিত হয়নি। দলের জেলা নেতৃত্বও এই আন্দোলনের কথা কিছুই জানতেন না বলে ওই অংশের দাবি। 


কলকাতা: পঞ্চায়েত মামলায় অবশেষে তাত্পর্যপূর্ণভাবে সুর নরম করল রাজ্য সরকার৷ যে ইস্যুতে এতদিন পর্যন্ত সরকার অনড় অবস্থান নিয়েই চলছিল, যে ইস্যুতে সরকারের বক্তব্য ছিল, সময়ে ভোট না হলেও পরোয়া নেই, প্রশাসক বসিয়ে কাজ চলবে-সেই ইস্যুতেই এই প্রথম প্রকাশ্যে সরকার পক্ষ স্বীকার করে নিল সময়মতো পঞ্চায়েত ভোট না হলে রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে৷ এদিন সওয়াল চলাকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় আদালতের কাছে আর্জি জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ৪২ নং ধারা অনুযায়ী রাজ্য সরকার ফের দিনক্ষণ ঘোষণা করছে৷ কমিশনকে ৪৩-র ১ ধারা অনুযায়ী নির্ঘণ্ট প্রকাশ করতে নির্দেশ দিক আদালত৷ ১০ জুনের মধ্যে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করতেই হবে৷ নইলে পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হবে৷ অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার মন্তব্য করেন, এই বিষয়টি মাথায় ছিল বলেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খুঁজতে দু'পক্ষকে পরামর্শ দিয়েছিল আদালত৷ কিন্তু আপনারাই কোনও সমাধানসূত্র বের করতে পারেননি৷ আপনারা কি দূরদৃষ্টি এবং বিবেচনাবোধের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন? এখনও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের রাস্তা খোলা রয়েছে৷ আদালতে সরকারের এই সুর নরম করাকে বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল৷ তাঁদের ব্যাখ্যা, সময়ে পঞ্চায়েত ভোট না হলেও সমস্যা নেই৷ প্রশাসক বসিয়েই কাজ চলবে -- শুরু থেকে এই অবস্থান নিয়ে চললেও দেরিতে বোধোদয় হয়েছে রাজ্য সরকারের৷ কর্তাব্যক্তিরা বুঝতে পেরেছেন, পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে৷ সেক্ষেত্রে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ বন্ধ হয়ে যেতে পারে উন্নয়নমুলক কাজ৷ এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে রাজনৈতিক ক্ষতি হবে তৃণমূলের৷ সাধারণ মানুষের কাছে সদিচ্ছার বার্তা দিতেই তাই সরকারের সুর নরম৷ বৃহস্পতিবার ফের মামলার শুনানি৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36196-2013-04-30-13-51-41


লোকসভায় বিরোধী দল নেত্রী সুষমা স্বরাজ আজ ইউপিএ চেয়ারপার্সেন সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ আনলেন। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি নেত্রী মন্তব্য করেছেন লোকসভায় সোনিয়া কংগ্রেসের সাংসদের তাঁর বক্তব্যে বাধা দেওয়ার জন্য উসকানি দিয়েছেন। তিনি সোনিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনে বলেছেন, ``সোনিয়া গান্ধী যা চান সেটাই লোকসভায় হয়।`` 

ক্ষুব্ধ সুষমা বলেছেন, লোকসভায় কংগ্রেস সভাপতি কোনও রকম গণতান্ত্রিক পরিবেশের ধার ধারেন না। তবে শুধু সোনিয়া গান্ধী নন সুষমা তোপ দেগেছেন লোকসভার স্পিকার মীরা কুমাররের বিরুদ্ধেও। তিনি জানিয়েছে, যখন কংগ্রেস সাংসদরা তাঁর বক্তব্য পেশের সময় ক্রমাগত চেঁচিয়ে যাচ্ছিলেন সেই সময় স্পিকার তাঁদের বিন্দুমাত্র বাধা দেননি। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে স্পিকারের ডাকা কোনও সভায় বিজেপি আর যোগ দেবে না বলে জানিয়েছেন সুষমা। এমনকি বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমল নাথের ডাকা মিটিংয়েও বিজেপি থাকবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। সুষমা স্বরাজের সাংবাদিক সম্মেলনের পর কংগ্রেসের নেত্রী রেণুকা চৌধুরি তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সুষমার এই মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছেন। 

সারদা কাণ্ডের প্রতারণার তদন্তে আজ থেকেই শুনানি শুরু করল বিচারপতি শ্যামল সেন নেতৃত্বাধীন কমিশন। কিন্তু, প্রথম দিন থেকেই চরম বিভ্রান্তির শিকার অভিযোগকারীরা। যে তথ্য তারা জমা দিচ্ছেন, তার বিনিময়ে কোনও প্রামাণ্য দেওয়া হচ্ছে না। এখানেই শেষ না। অভিযোগকারীদের জন্য কমিশনের যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা, তা এখনও প্রকাশিত হয়নি। 

তথ্য সংস্কৃতি দফতর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করা পর্যন্ত বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন অভিযোগকারীরা। এদিকে, শুনানির প্রথম দিনেই অভিযোগকারীদের উপচে পড়ে কমিশনের দফতরে। সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন স্কিমে আমানতের সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য তথ্য নিয়ে সকাল থেকেই হাজির হন বহু আমানতকারী। কমিশনের দফতরের বাইরে ডেস্কে অভিযোগ জমা দিয়েছেন তাঁরা। বেলা যত গড়িয়েছে ততই দীর্ঘ হয়েছে আমানতকারীদের লাইন। 

যুদ্ধে নেমেছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর এই যুদ্ধ শাসক দলের বেশকয়েকজন নেতামন্ত্রীদের যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কুণাল ঘোষের পরে কে? তৃণমূল কংগ্রেসের  অন্দরমহলে এখন এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। নিজের স্বপক্ষে তথ্য প্রমাণ নিয়ে গতকালই বিধাননগর পুলিসের কাছে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কুনাল ঘোষ। জেরায় নিজের স্বপক্ষে তিনি কী শুধুই যুক্তি দিয়েছেন? নাকি পুলিসি জেরায় এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন যাতে বিপাকে পড়তে পারেন দলের অনেক শীর্ষ নেতাই? 

সোমবার সন্ধেয় নিজের গাড়িতে চেপে বিধাননগর পুলিস কমিশনারের অফিসে হাজির  হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কুণাল ঘোষ। সেসময় তাঁর হাতে ছিল একটি ফাইল। প্রায় পৌনে দু ঘন্টা বিভিন্ন বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দা প্রধান অর্নব ঘোষ। পুলিসি জেরার তিনি বেশকিছু তথ্য প্রমাণ দিয়েছেন বলে খবর।


সেন স্যার খুশি হলে ঘনিষ্ঠ তরুণীরা উপহার পেতেন দামি গাড়ি, মোবাইল বা নামি ডিজাইনারের শাড়ি। তাঁদের বিরুদ্ধে নালিশ করলে রক্ষা ছিল না। তেমনই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন সারদা গোষ্ঠীর কাজ হারানো এক তরুণী। 


সুদীপ্ত সেনের ঘনিষ্ঠ প্রমিলা বাহিনীর একজনের বিরুদ্ধে সেন স্যারের কাছেই নালিশ জানিয়েছিলেন সারদা গোষ্ঠির জনসংযোগ বিভাগের এক মহিলা কর্মী। তার জেরে, গভীর রাতে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে ওই তরুণীকে মদ্যপ সুদীপ্ত সেনের নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। চাকরিও চলে যায় টুয়া রায় নামে ওই তরুণীর। 


সিপিআইএম নেতা গৌতম দেবের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো এবং তৃণমূল যুবার সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল পানিহাটির জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা `লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস` সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন গৌতম দেব। কার অনুমতিতে ওই সংস্থার মাইক্রো ফিনান্সের ব্যবসা চলছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন আবাসনমন্ত্রী। গৌতম দেবের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং হাস্যকর বলে দাবি করেছে তৃণমূল যুবা। 

গৌতম দেবের নাম উল্লেখ না করে তৃণমূল যুবার তরফে জানানো হয়েছে,  রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী অভিযেক ব্যানার্জির বিরুদ্ধে ভুয়ো এবং কুত্‍সামূলক মন্তব্য করেছেন। গতকাল পানিহাটির জনসভায় চিটফান্ড কাণ্ড নিয়ে সরকারের সমালোচনায় সরব ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। তৃণমূলের দাবি, তাঁর অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও তথ্যই দিতে পারেননি প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী। 

প্রাক্তন মন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যুবার পাল্টা বক্তব্য, তিনশো কোটি নয়, তিনশো টাকার দুর্নীতি থাকলেও তা প্রমাণ করে দেখান প্রাক্তন মন্ত্রী। প্রাক্তন মন্ত্রী একজন ব্যক্তির চরিত্র হননে নেমেছেন। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলার সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে যুবার তরফে। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ৪ মে, শনিবার পানিহাটিতে পাল্টা সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।


সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে দায়ের হল আরও একটি জনস্বার্থ মামলা। প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেসের আইনজীবী সেলের তরফে আজ জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করা হয়। আবেদনকারী নরেন্দ্র প্রসাদ গুপ্তার আবেদনের ভিত্তিতে ২মে এই মামলার শুনানি হবে। 

সারদা গোষ্ঠীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে অবিলম্বে আমানতকারীদের অন্তত ২৫ শতাংশ অর্থ ফেরত ও সংস্থার যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হাইকোর্টের কাছে রিসিভার নিয়োগের দাবি জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের আইনজীবী সেল। সারদা-কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের ভূমিকা খতিয়ে দেখার জন্যও আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে বাসবী রায়চৌধুরী নামে এক আইনজীবী এর আগে একই ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছিলেন।

আজ সকালে ফের সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে জেরা শুরু করলেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। সারদা গোষ্ঠীর ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কেও জেরা করা হবে বলে জানা গেছে।

সারদাকাণ্ডে জালিয়াতির নতুন তথ্য উঠে এল পুলিসের হাতে। সুদীপ্ত সেন ফেরার হওয়ার পর ১৭ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে আনুমানিক দশ হাজার নতুন পলিসি। পুলিস জানতে পেরেছে জালিয়াতির উদ্দেশ্যে পলিসিগুলি তৈরি করেছিলেন কয়েকজন এজেন্ট। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। 

ওই সব এজেন্টদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিস। সারদা গোষ্ঠীর আইটি ডিভিশনের আরও একটি সার্ভার রয়েছে আমেরিকার বস্টনে। ওই সার্ভারেই রয়েছে সংস্থার মূল ডেটাবেস। সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণে মাসে খরচ হত দু কোটি টাকা। ওই সার্ভার থেকে তথ্য জোগাড়ে ইন্টারপোলের সাহায্য নিচ্ছে পুলিস। 


আসানসোলে সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে জমা পড়া অভিযোগের তদন্ত করতে গতকালই আসানসোল পুলিসের তিন সদস্যের একটি দল কলকাতায় আসে। রাতে ইলেক্ট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় মনোজ নাগেল ও অরবিন্দ সিং চৌহানকে জেরা করা হয়। এরপর নিউটাউন থানায় জেরা শুরু হয় সুদীপ্ত সেনকে। তবে আইনজীবীর আপত্তি থাকায় রাতে জেরা করা সম্ভব হয়নি দেবযানীকে।  


সারদা কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতে সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা৷ বামেদের দিকে পাল্টা তোপ দেগেছে শাসক দল৷ আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের সেই আবহেই এবার জেলায় জেলায় প্রকাশ্যে আসছে একাধিক লগ্নি সংস্থার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ৷ কোথাও কাঠগড়ায় শাসক দল৷ কোথাও বিরোধীরা৷
কয়েকদিন আগে লগ্নি সংস্থা থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী৷ কিন্তু এবার তাঁরই ভাই তথা কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর ছবি ও প্রশংসাপত্র দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে৷ কয়েকদিন আগে পর্যন্তও এই দফতরের সামনে ঝুলছিল সংস্থার মালিক ও সৌমেন্দুর ছবি এবং তাঁর প্রশংসাপত্র৷ আমানতকারীদের অভিযোগ, বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের নজরে আসার পরই সংস্থাটি তালা ঝুলিয়ে পাততাড়ি গুটিয়েছে৷ স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, পুরসভাও এই লগ্নি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত৷ এবিষয়ে সৌমেন্দু বা তৃণমূলের অন্যান্য নেতারা অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি৷ 
আসানসোলের স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা মেয়র ইন কাউন্সিল অনিমেষ দাসের বিরুদ্ধেই লগ্নি সংস্থা চালানোর অভিযোগে সরব স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব৷ বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য আসানসোল পুরসভার মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা৷ স্থানীয় এক সিপিএম নেতার বক্তব্য,  যতদিন না ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ততদিন বোর্ড মিটিং বয়কটেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিপিএম৷ মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন৷ অনিমেষ দাসের পাল্টা দাবি, এটি কোনও লগ্নি সংস্থা নয়৷ 
দুর্গাপুরেও প্রতারণায় অভিযুক্ত একটি লগ্নি সংস্থার সঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা৷ দুর্গাপুরের বাসিন্দা অজিত দাসের অভিযোগ, স্থানীয় একটি সংস্থায় ২০০৯ সাল থেকে কিস্তিতে টাকা জমা রাখেন তিনি৷ সংস্থার তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, নির্দিষ্ট সময় পর তাঁকে ৬ কাঠা জমি দেওয়া হবে৷ কিন্তু অজিতবাবুর অভিযোগ, হঠাত্‍ সংস্থাটি দফতরে তালা ঝুলিয়ে চম্পট দেয়৷ মঙ্গলবার ওই সংস্থার দফতরে তল্লাশি চালায় পুলিশ৷ স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, এই সংস্থার একটি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বহুবার দেখা গিয়েছে৷ 
তৃণমূল নেতাদের পাল্টা দাবি, তাঁরা আমন্ত্রণ পেয়েই সেখানে গিয়েছিলেন৷ দুর্গাপুরের মেয়র সম্প্রতি এ ধরনের ৫২টি সংস্থার তালিকা তৈরি করে জেলাশাসকের হাতে তুলে দেন৷ আবেদন করেন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য৷ কিন্তু সেই তালিকাতেও এই সংস্থার নাম ছিল না৷ মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, তালিকা তৈরির কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে৷ নদিয়ার কোতোয়ালি থানা এলাকায় আবার একই অভিযোগের নিশানায় ডিওয়াইএফআই৷ সিপিএমের যুব সংগঠনের কৃষ্ণনগর উত্তর লোকাল কমিটির সদস্য সুজিত মিত্রর বিরুদ্ধেই লগ্নি সংস্থার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে৷ সোমবার করুণাময় ঘোষ নামে এক আমানতকারী কোতোয়ালি থানায় সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন৷ ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সম্পাদক সুমিত বিশ্বাস অবশ্য জানিয়েছেন, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ 
লগ্নি সংস্থা ঘিরে কেলেঙ্কারির ইস্যুতে ইতিমধ্যেই একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে শাসক-বিরোধীরা৷ তবে জেলায় জেলায় এই নজির কোনওপক্ষকেই স্বস্তি না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36198-2013-04-30-14-54-46

কলকাতা: শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার৷ ঘরে বাসা দারিদ্রের৷ সারদা বিপর্যয়ের জেরে আরও সঙ্কটে জীবনের লড়াই৷
বয়স মাত্র সাত৷ বাগুইআটি থানার এলাকার বাসিন্দা এই শিশুর শরীরে সাড়ে তিন বছর আগেই বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার৷ বাবা পেশায় মাছের ব্যবসায়ী৷ এক বছরের প্রকল্পে অল্প অল্প করে টাকা জমা করেছিলেন সারদায়৷ কিন্তু সব গেছে৷ নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে ছেলের ব্যয়বহুল চিকিত্সা করাতে হিমশিম বাবা৷ তাঁর অসহায় আর্তি, টাকা রেখেছিলাম দুই ভাই মিলে৷ ম্যাচিওর করার মুখে বিপর্যয়৷ কী করে চিকিত্সা করাব, বুঝতে পারছি না৷ শিশুর মা বলছেন, মাঝে মাঝেই জ্বর আসে৷ কাশি কিছুতেই কমতে চায় না৷ ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে৷ কিন্তু এবার কী হবে? কোথা থেকে আসবে চিকিত্সার খরচ? শিশুটির মাসিকে বলতে শোনা গেল, বুঝতেই পারছি না কী করে কী করব৷
সারদাকাণ্ডে প্রতারিতদের ক্ষতিপূরণের জন্য ৫০০ কোটি টাকার তহবিল গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এজন্য সিগারেটের ওপর বাড়তি কর বসিয়ে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি করে সিগারেট খেতে বলেছেন তিনি৷ পরিসংখ্যান বলছে, ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্যান্সারই হয় ধূমপান থেকে৷ ধূমপানের ফলে রাজ্যের ২১ শতাংশ লোক ভুগছেন ফুসফুসের ক্যান্সারে৷ ভয়াবহ বাস্তবের মুখে ক্যান্সার চিকিত্সক আশিস মুখোপাধ্যায় বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী হালকা চালে একথা বললেও তা মেনে নেওয়া যায় না৷ আরেক ক্যান্সার চিকিত্সক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, যত বেশি ধূমপান করবেন, তত কমতে থাকে আয়ু৷ হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে৷ চিকিত্সকদের বক্তব্য, প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ ধূমপানেই ক্ষতি হতে পারে বিশাল৷ প্রশ্ন উঠছে, তারপরও কী করে বেশি করে সিগারেট খাওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী? 

http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/36197-2013-04-30-14-30-36

কলকাতা: মঙ্গলবার সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে সূত্রের খোঁজে জেরা করেন দুর্গাপুর-আসানসোল কমিশনারেটের গোয়েন্দারা৷ ওই এলাকায় সারদার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ কত, নাগেলের নেতৃত্বে ওই এলাকায় কোন এজেন্টরা টাকা তোলার কাজ করতেন, আর এখনও পর্যন্ত কত টাকাই বা  উঠেছে, সে ব্যাপারে  প্রায় দুঘণ্টা তাঁদের জেরা করা হয়৷ 
সোমবার রাতেই দুর্গাপুর-আসানসোল পুলিশ কমিশনারেট থেকে সল্টলেক ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় আসে গোয়েন্দাদের একটি দল৷ দলে রয়েছেন দুই সাব ইন্সপেক্টর সিদ্ধার্থ ঘোষাল এবং রবীন গঙ্গোপাধ্যায়৷ রাতে প্রায় দু'ঘণ্টা জেরা করা হয় দুর্গাপুরে সারদার দায়িত্বে থাকা মনোজকুমার নাগেল ও অরবিন্দকুমার চহ্বণকে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার মুখে সারদার অধিকর্তা জানিয়েছেন, বেহিসেবি খরচের জন্যই সারদার বিপুল ক্ষতি হয়েছে৷ ১০০ টাকার মধ্যে ৩৫ শতাংশ নিয়ে নিতেন এজেন্টরা৷ ১০ শতাংশ খরচ হত অফিসের জন্য৷ ৫৫ শতাংশ আসত সংস্থার কাছে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, নাগেল দাবি করেন, তাঁকে কীভাবে অধিকর্তা করা হল, তা তিনি জানতেনই না৷ অনেক পরে তিনি এই বিষয়টি জানতে পারেন৷ আজ সকাল ন'টা থেকে এগারোটা পর্যন্ত সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কেও জেরা করেন গোয়েন্দারা৷ জিজ্ঞাসাবাদ পর্বটি ভিডিও রেকর্ডিংও করে রাখা হয়৷ সারদাকাণ্ডে আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটে মোট পাঁচটি মামলা রুজু হয়েছে৷ এর মধ্যে দুর্গাপুর থানায় তিনটি মামলা৷ নিউ টাউনশিপ থানায় একটি মামলা এবং আসানসোল উত্তর থানায় একটি মামলা৷ এছাড়া ১৯ এপ্রিল যাদব মাঝি নামে সারদার এক এজেন্টের আত্মহত্যার ঘটনাতেও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়৷ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই মামলাগুলির তদন্ত করতেই তাঁদের এখানে আসা৷ (ফাইল চিত্র)

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36194-2013-04-30-12-10-58

নয়াদিল্লি: ভুঁইফোড় আর্থিক সংস্থাগুলিকে সমূলে নির্মূল করতে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ৷ সারদা গোষ্ঠীর মতো চিটফান্ডগুলির রমরমা ব্যবসা বন্ধ করার কথা বললেন তিনি৷ ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বেআইনি চিটফান্ডের দাপট ঠেকানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন মনমোহন৷ বহু কষ্ট, পরিশ্রমের ফসল সারদা গোষ্ঠীতে বিনিয়োগ করে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন তিনি৷ তাঁর বক্তব্য, চড়া হারে সুদ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেআইনিভাবে লোকের কাছ থেকে টাকা তোলা বন্ধ করতে হবে৷

গত কয়েকদিন ধরে সারদা ও তাদের মতো চিটফান্ডগুলির বিরুদ্ধে আমানতকারী ও এজেন্টদের পুঞ্জীভূত রোষ আছড়ে পড়ছে রাজ্যের এখানে ওখানে৷সারদা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছিল, কেন্দ্রীয় আইনের ফাঁককে কাজে লাগিয়ে অবাধে ব্যবসা চালাচ্ছে চিটফান্ডগুলি৷ গত ২৪ এপ্রিল তহবিল গঠনের কথা বলতে গিয়ে, বামেদের পাশাপাশি চিটফান্ডের দায় কেন্দ্রের ওপরেও চাপান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ চিটফান্ড রুখতে কেন্দ্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও৷ 
এরপরই নড়েচড়ে বসল কেন্দ্রীয় সরকার৷ ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা ঘিরে বিপুল কেলেঙ্কারির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নামল একাধিক সংস্থা৷ কেন্দ্রের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে,কোম্পানি বিষয়কমন্ত্রক, সেবি ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই চিটফান্ড সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে৷ পাশাপাশি অর্থমন্ত্রক সূত্রে খবর, সারদাকাণ্ডে এসএফআইও-র পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে আয়কর দফতরও৷ সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট৷ 
অন্যদিকে, আর্থিক প্রতারণা রুখতে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবিকে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়ার পথে কেন্দ্রীয় সরকার৷ 
এর জন্য সেবি অ্যাক্ট, দ্য সিকিওরিটিস কনট্র্যাক্ট অ্যাক্ট এবং ডিপোসিটরস অ্যাক্ট সংশোধনেরও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্র৷ এর ফলে কোনও প্রতারক সংস্থার সম্পত্তি সরাসরি বাজেয়াপ্ত করার এক্তিয়ার পাবে সেবি৷ তদন্তের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকেও তথ্য তলব করতে পারবে তারা৷  
সূত্রের খবর, খুব দ্রুত আইন সংশোধন করা হবে বলে সেবিকে আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র৷ চিটফান্ড নিয়ে সরকার যে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও৷ এ দিন রাষ্ট্রপতি ভবনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ চিটফান্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, মোটা টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চিটফান্ড সংস্থাগুলি আমানতকারীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে অর্থ সংগ্রহ করছে৷ এই ধরণের সংস্থাকে নির্মূল করতেই হবে৷ 
চিটফান্ড দৌরাত্ম্য বন্ধে একাধিক সংস্থার তত্‍পরতা৷ সেবিকে শক্তিশালি করার ভাবনা৷ বিবৃতি খোদ প্রধানমন্ত্রীর৷ সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, এইসব পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট, চিটফান্ডের রমরমার দায় যে কোনও মূল্যে ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে ইউপিএ টু সরকার৷

http://www.abpananda.newsbullet.in/national/60-more/36107-2013-04-27-13-35-30

সারদার সভায় হাজির ছিলেন সোমেনও


সারদার সভায় হাজির ছিলেন সোমেনও
তাপস প্রামাণিক 

সারদা গোষ্ঠীর বার্ষিক সভায় সুদীপ্ত সেনের ভূয়সী প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েও পরবর্তীকালে ভোল পাল্টে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে নালিশ ঠুকেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সোমেন মিত্র৷ নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মহা সমারোহে সারদার বার্ষিক সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ সেখানে আর পাঁচ জন বিশিষ্ট অতিথির সঙ্গেই হাজির ছিলেন সোমেনবাবুও৷ সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের পাশে দাঁড়িয়ে সোমেনবাবু সে দিন বলেন, 'বহু পরিশ্রম ও লড়াই করে সুদীপ্ত আজ হাজার হাজার মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পেরেছে৷ এখন দায়িত্ব আপনাদের (কর্মী ও এজেন্টদের)৷ এই পরিবার ও তার সমস্ত সম্পদ শ্রীবৃদ্ধির কৃতিত্ব আপনাদেরও৷ গোটা সারদা গোষ্ঠীকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে আরও গর্বের হিসাবে গড়ে তুলতে হবে সবাইকে৷' জবাবি ভাষণে সুদীপ্তবাবু সোমেনবাবুকে 'সারদা সংস্থার অভিভাবক' বলে মন্তব্য করেন৷ 

ওই সভায় প্রাক্তন ফুটবলার অলোক মুখোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেওয়া হয় সারদার পক্ষ থেকে৷ সভা মঞ্চে হাজির ছিলেন চিকিত্‍সা, শিক্ষা এবং সংস্কতি জগতের বিশিষ্টদের পাশাপাশি টেলিভিশন, টলিউড এবং বলিউডের তারকারাও৷ অতিথিদের তালিকায় ছিলেন, লিভার ফাউসেন্ডশনের ডঃ অভিজিত্‍ চৌধুরি ও ডঃ পার্থ মুখোপাধ্যায়, সিপিএম বিধায়ক তথা আইপিএস দেবেন বিশ্বাস, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্‍কালীন উপাচার্য অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্ত এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়৷ গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন সারদার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়৷ তিনি সোমেন মিত্রকে সারদা গোষ্ঠীর উপদেষ্টামন্ডলীর চেয়ারম্যান হিসাবে মঞ্চে আসন গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান৷ 

এই সোমেনবাবুই পরবর্তীকালে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যান৷ ২০১১ সালের ২৭ জুলাই, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সারদা-সহ একাধিক চিটফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন৷ প্রশ্ন উঠেছে, একজন বর্ষীয়ান ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হয়ে সোমেনবাবু কোনও খোঁজখবর না নিয়ে কী ভাবে সারদা গোষ্ঠীর মতো প্রতারক সংস্থার অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে সুদীপ্তবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন৷ আর কেনই বা তিনি পরবর্তীকালে ভোল পাল্টে সারদার নামে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানাতে গেলেন? তৃণমূল সূত্রের খবর, নানা কারণে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় সারদা সম্পর্কেও অবস্থান বদলে ফেলেন সোমেনবাবু৷ সারদার সভায় তাঁর উপস্থিতি নিয়ে সোনেনবাবুর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি৷ 

সারদা গোষ্ঠীর বার্ষিক সভার দ্বিতীয় দিনেও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির পা পড়েছিল ওই মঞ্চে৷ তার মধ্যে অন্যতম তৃণমূল নেতা তথা আজকের পরিবহন মন্ত্রী মদন নিত্র, ওই সভা মঞ্চ থেকেই সারদার তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হয় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার, তত্‍কালীন উপাচার্য করুণাসিন্ধু দাস, উত্‍কল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিনায়ক রায় এবং উত্তরবঙ্গের আইজি কুন্দনলাল টামটাকে৷ 

http://eisamay.indiatimes.com/-/Somen-mitra-also-went-to-saradhas-programme/articleshow/19797365.cms


গৌতমের 'কল্পিত কুৎসা'র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি
মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর বিরুদ্ধে সিপিএম নেতাদের ব্যক্তিগত আক্রমণের মোকাবিলায় আইনি পথে হাঁটল তৃণমূল। আর রাজনৈতিক মোকাবিলার লক্ষ্যে পাল্টা প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। সারদা-কাণ্ডে তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের জড়িয়ে যে প্রচার বিরোধীরা করছে, তার জবাব দিতে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে শ্যামবাজার এবং পানিহাটিতে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে দলীয় সভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে প্রাক্তন আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেব মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যবসায়িক কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বুদ্ধ-গৌতমের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "অভিষেক উচ্চশিক্ষিত। এমবিএ পাশ করেছেন। তাঁকে সামনে রেখে সিপিএমের কিছু বাতিল নেতা মিথ্যাচার করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে।" অভিষেক নিজে সংবাধমাধ্যমের কাছে মুখ না-খুললেও, তৃণমূলের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, 'আমাদের যুব শাখা তৃণমূল যুবার সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা একটি জনসভায় পুরোপুরি কল্পিত এবং কুৎসামূলক অভিযোগ করেছেন।
সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মহাসচিব, তৃণমূল কংগ্রেস।— নিজস্ব চিত্র।
'অভিযোগ হল, অভিষেকের সংস্থা চিট ফান্ডে জড়িত এবং তারা ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। এই অভিযোগ হাস্যকর এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা। সিপিএম ওই অভিযোগের সপক্ষে এক বিন্দু প্রমাণও দেয়নি। আমরা সিপিএম দল এবং তাদের নেতাদের আহ্বান জানাচ্ছি তাঁরা ওই সংস্থার (মোটেই চিট ফান্ড ব্যবসায় জড়িত নয়) নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখে ৩০০ কোটি দূর অস্ত্, ৩০০ টাকার দুর্নীতি বার করুন!' ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের সরকার একাকার হয়ে গিয়েছে বলে পানিহাটির সভায় বুদ্ধবাবু, গৌতমবাবুরা অভিযোগ করেছিলেন। এ দিন সিপিএমের প্রকাশনা সংস্থার টেলিফোন নির্দেশিকায় সারদা-সহ একাধিক ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার বিজ্ঞাপন দেখিয়ে পার্থবাবু প্রশ্ন তোলেন, "এই বিজ্ঞাপন কাদের?" তিনি প্রশ্ন তোলেন, ২০১০ সালে ফিল্মোৎসবের খরচের টাকা কে দিয়েছিল? এ নিয়ে তদন্ত দাবি করেন পার্থবাবু। পানিহাটিতে গৌতমবাবুর বক্তব্যের সমালোচনা করে পার্থবাবু বলেন, "আমরা মানহানির মামলা করছি। যাঁরা বলেছেন, যাঁরা সেই বক্তব্য ছেপেছেন, কেউই বাদ যাবেন না।"

"অভিষেক উচ্চশিক্ষিত। এমবিএ পাশ করেছেন। তাঁকে সামনে রেখে সিপিএমের কিছু বাতিল নেতা মিথ্যাচার করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে।"
পার্থ চট্টোপাধ্যায়
মহাসচিব, তৃণমূল কংগ্রেস


পার্থবাবুর বক্তব্য ছাড়াও, এ দিন দলীয় ওয়েবসাইটে বলা হয়, 'তৃণমূল জনস্বার্থের সঙ্গে জড়িত বিষয়েই রাজনীতি করায় বিশ্বাস করে। বিরোধী পক্ষের নীতি-আদর্শ ভুল মনে হলে আমরা সেগুলিকে আক্রমণ করি। কিন্তু আমরা বানানো অভিযোগ তুলি না, বা রাজনীতিকদের পরিবারের লোকজনকে দলাদলিতে জড়াই না। সিপিএম এবং তাদের এক প্রাক্তন মন্ত্রী যা করেছেন, তা এক জন নির্দোষ মানুষের মানহানির সমান। তাঁরা শীঘ্রই আমাদের আইনজীবীর কাছ থেকে চিঠি পাবেন।' ওয়েবসাইটে ঘোষণা ছাড়াও, তৃণমূলের পক্ষে দলের আইনজীবী সেলের নেতা রাজদীপ মজুমদার জানান, পানিহাটি জনসভায় গৌতমবাবু যে মন্তব্য করেছেন, সে জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। নোটিস পাওয়ার পরে তিনি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা না-চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে। উল্লেখ্য, এর আগেও কালো টাকা নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। 
গৌতমবাবু এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, "আমি মমতার ভাইপোর আইনজীবীর চিঠি পেয়েছি। ওঁরা বিষয়টিকে আদালতে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। যাতে বিষয়টি বিচারাধীন বলে আমাদের মুখ বন্ধ করা যায়। কিন্তু এ ভাবে মুখ বন্ধ করা যাবে না। আমাদের আইনজীবী ওই চিঠির জবাব দেবেন।" 
আইনি পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীদের রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলার কর্মসূচিও তৃণমূল নেতৃত্ব নিয়েছেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করতে তৃণমূল নেত্রী সামনের শুক্রবার দুপুরে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে দলের সাধারণ পরিষদের সভা ডেকেছেন। তবে তার আগেই ২ মে, বৃহস্পতিবার শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে জনসভায় বক্তৃতা করবেন মমতা। পার্থবাবু জানান, রাজ্যে উন্নয়নের কাজে যাঁরা বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মানুষকে সজাগ ও সতর্ক করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। শনিবার ৪ মে পানিহাটিতে যেখানে গৌতমবাবুরা সভা করে 'মিথ্যাচার' করেছেন, সেখানেই সমাবেশ করবে তৃণমূল। সেই সমাবেশেও মুখ্য বক্তা মমতা। 
মমতার পথে নামার কর্মসূচি নিয়ে বলতে গিয়ে পার্থবাবু, দলের রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ সুব্রত বক্সীর ব্যাখ্যা, "আমাদের নেত্রী সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন। আমরা সেই ভাবেই দলের কাজ করতে অভ্যস্ত।"
তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারের ৩৪ বছরের শাসনকালের দুর্নীতি ও অনুন্নয়নের ছবি সরিয়ে মমতা-সরকারের দু'বছরের উন্নয়নের কাজকে খাটো করার চেষ্টা চলছে। পানিহাটিতে সিপিএমের সভা থেকে মমতা ও তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে যে সব অভিযোগ গৌতমবাবুরা করেছেন তার তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূলের ওয়েবসাইটে এ দিন বলা হয়েছে, 'আমরা এই প্রকাশ্য কুৎসা এবং কাদা ছোড়াছুড়ির নিন্দা করছি। যদিও এতে আমরা অবাক হইনি। সিপিএম জানে, রাজ্য সরকারের নতুন চিট ফান্ড আইন এবং সারদা-কাণ্ডের তদন্তে তাদের অনেক বর্ষীয়ান সদস্যের ভূমিকা জানাজানি হয়ে যাবে এবং তার ফলে দল যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়বে। সে জন্যই তারা আতঙ্কিত। তাই কমিউনিস্টরা এ ভাবে চরিত্র হনন করে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।'
তবে পানিহাটিতে তৃণমূলের পাল্টা সভার কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি গৌতমবাবু। বলেন, "মমতা ভয় পেয়েছেন বলেই পানিহাটিতে পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা করুন। কিন্তু মানুষ আর ওঁর কথা আর বিশ্বাস করছে না। ক'দিনের মধ্যেই আমি আবার মুখ খুলব। আরও তথ্য ফাঁস করব। তৃণমূলের নেতাদের কাছে এত কোটি কোটি টাকা কথা থেকে এসেছে তার জবাব চাই।" 
তবে গৌতমবাবুদের বক্তব্যকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে পার্থবাবু সাফ বলে দেন, "এরা ভরপেট খেয়ে এখন মিথ্যা কথা বলছেন। ওঁরা যা বলেছেন কোনও সুস্থ মানুষ তা বলতে পারেন না।" বাংলার মানুষ যে এখনও তৃণমূল নেত্রীর উপর ভরসা রাখেন তা জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, "শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, মমতাই মানুষের ভরসা।"


পুরনো খবর:
http://www.anandabazar.com/30raj1.html
খাতায় আয় কম দেখিয়ে আয়করও দিত না সারদা
হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। কিন্তু পর্বতের মূষিক প্রসবের মতোই আয়ের বহর কয়েক লক্ষ টাকা। সারদা গোষ্ঠী কয়েক হাজার কোটি টাকার লেনদেন করত, কিন্তু খাতায় কলমে আয়ের দেখাত সামান্য। ওই আয়ের উপরও যে-কর হত, তা-ও তারা দিত না। সারদা কাণ্ডের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছেন আয়কর অফিসারেরা। যার সঙ্গে মিলে গিয়েছে সুদীপ্তকে জেরা করে পুলিশের পাওয়া তথ্য-ও। পুলিশ সূত্রের খবর, সারদার ব্যবসায় গত দু'বছর কোনও অডিট হয়নি। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন শাখায় হিসেবে রাখার ক্যাশবুকও রাখতেন না সারদা কর্তৃপক্ষ। বিধাননগরের গোয়েন্দাপ্রধান অর্ণব ঘোষ সোমবার বলেন, "সারদার যে শাখা অফিসগুলো ছিল সেই শাখা অফিসে ক্যাশবুকই ছিল না। এমনকী, কম্পিউটারেও সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোনও হিসাব রাখা হত না।" এর ফলে খুব সহজেই লক্ষ লক্ষ টাকা আর্থিক তছরুপও সম্ভব বলে পুলিশের দাবি।
আয়কর দফতর সূত্রের খবর, ২০০৯-'১০ আর্থিক বছরে সারদা গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান সংস্থা সারদা রিয়্যালটিজের আয়করের হিসাব হয়েছিল ১৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু ওই টাকা তারা মেটায়নি। ২০১০-'১১ সালে সারদা রিয়্যালটিজের নিজেদের হিসাব অনুযায়ীই আয়করের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৮ লক্ষ টাকা। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ২০ লক্ষ টাকা তারা দিয়েছে। ২০১১-'১২ সালে তারা আয়কর রিটার্নই জমা দেয়নি।
এ ছাড়া বহু ক্ষেত্রেই এজেন্টদের যে-কমিশন দেওয়া হত, তার থেকে টিডিএস কাটা হত না বলেও আয়কর দফতর সূত্রের খবর। একই ভাবে কাটা হত না ম্যাচিওরিটি বা মেয়াদপূর্তির পর প্রাপ্য টাকার উপর টিডিএসও। কমিশনের পরিমাণ আয়কর দফতরের কাছে গোপন রাখার পাশাপাশি এজেন্টদের হাতে বেশি টাকা তুলে দেওয়ার জন্যই সারদা কর্তৃপক্ষ এটা করতেন বলে আয়কর অফিসারদের ইঙ্গিত। তাঁরা বলছেন, কিন্তু ফেরত দেওয়ার দায় থাকলেও ব্যবসায় লগ্নি করে খাতায়-কলমে আয় দেখানোর ব্যাপারে তারা খুব আগ্রহী ছিল না।
একই তথ্য উঠে এসেছে পুলিশি তদন্তে-ও। অর্ণববাবু জানান, কোন শাখায় কত লেনদেন হতো এবং সেখান থেকে কত টাকা তছরুপ হয়েছে সেই ব্যপারে এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই জন্য বিধাননগর পুলিশের একটা আলাদা সেল তৈরি করা হয়েছে। শুধু শাখা অফিসেই আর্থিক তছরুপ নয় সল্টলেকের মিডল্যান্ড পার্কে সারদার প্রধান কার্যালয়ে আর্থিক তছরুপ কতটা হচ্ছিল তা-ও পরীক্ষা করে দেখছেন গোয়েন্দারা। 
রবিবার সকালে মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করে সিডি, কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক-সহ নথিপত্র। পুলিশ জানিয়েছে, কর্মীদের বেতন থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কাটা হলেও তা সরকারি কোষে ঠিক মতো দেওয়া হতো কি না, তা জানতে ওই নথিপত্র যাচাই করে দেখা হচ্ছে। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সারদায় মোট ২৫০০ কর্মী কাজ করতেন। তাঁদের বেতনের জন্য নির্ধারিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও 'পে-স্লিপ'-ও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সারদার সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই ছিল সুদীপ্ত সেনের নামে। এবং সেগুলি বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্কের। সংস্থার কোনও ডিরেক্টরের নামে অ্যাকাউন্ট ছিল না। সুদীপ্তবাবু টাকা পয়সার ক্ষেত্রে কার্যত কাউকেই বিশ্বাস করতে না। এখনও পর্যন্ত দু'শোরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দিল্লিতেও সারদার বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট মিলেছে। জেরায় জানা গিয়েছে, দিল্লিতে নতুন নতুন শাখা অফিস খোলার ব্যপারে জোর দেওয়া হয়েছিল দিল্লিতে। সেখানের পুরো কাজের দায়িত্ব ছিল সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া অরবিন্দ সিংহ চৌহানের উপরে। দিল্লিতে সারদা গোষ্ঠীর ব্যবসা ভাল না হওয়ায় অরবিন্দকে বকাবকিও করেছিলেন সারদা কর্তা। তদন্তকারীদের অনুমান, উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ব্যবসা ছড়ানোর উদ্দেশেই দিল্লি অফিসের উপরে জোর দিতে চেয়েছিল সারদা।
http://www.anandabazar.com/30raj2.html
এক ঢিলে দুই পাখি
লগ্নি-জাল ছড়িয়ে দিতেই মুখোশ সংবাদমাধ্যমের
বাইরের চেহারা যা, সেটা আসলে মুখোশ। ভিতরের মুখটা সম্পূর্ণ আলাদা! 
সংবাদপত্রের নতুন সংস্করণ চালু করার নামে সারদা-প্রধান সুদীপ্ত সেন বিভিন্ন রাজ্যে ১৭টি অফিস খুলেছিলেন। কিন্তু সংবাদ প্রকাশনা ছিল গৌণ, সেখান থেকে লগ্নির কারবার ছড়িয়ে দেওয়াই সুদীপ্তবাবুর মূল লক্ষ্য ছিল বলে বিধাননগর পুলিশের তদন্তকারীদের দাবি। এর বাইরেও কোথাও কোথাও আবার অফিস না-খুলে শুধু নিজস্ব সংবাদপত্রের জন্য কর্মী নিয়োগ করেছিল সারদা গোষ্ঠী। তদন্তকারীদের অনুমান, এর পিছনেও টাকা তোলার উদ্দেশ্যই ছিল মুখ্য। এ বার প্রয়োজনে ওই সব কর্মীদের চিহ্নিত করে তাঁদের কাউকে কাউকে জেরার কথা ভাবছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, লগ্নি-জাল বিস্তারের লক্ষ্যে সারদা গোষ্ঠী 'ওভারল্যান্ড মডেল' হাতিয়ার করতে চেয়েছিল বলে সুদীপ্তবাবু জেরায় জানিয়েছেন। সেটা কী? 
গোয়েন্দা-সূত্রের ব্যাখ্যা: লগ্নিসংস্থা ওভারল্যান্ড নিজেদের আর্থিক কারবার ছড়ানোর জন্য সংবাদপত্রকে বেছে নিয়েছিল। নিজস্ব সংবাদপত্রে তারা জেলাস্তরের খবরকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে লগ্নির ব্যবসাকে পৌঁছে দিতে চেয়েছিল প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের তৃণমূলস্তরে। তাদের দেখানো পথেই সুদীপ্তবাবু হাঁটতে শুরু করেছিলেন। 
এবং এই উদ্দেশ্যসাধনের স্বার্থে অর্থলগ্নির কারবারের সঙ্গে সাংবাদিকতাকে তিনি এক করে দিতে চেয়েছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। "সেন স্যার চাইছিলেন, তাঁর কাগজের জেলা-সাংবাদিক একাধারে খবর জোগাড় করবেন, আবার সারদার এজেন্ট হয়ে মানুষের থেকে টাকাও তুলবেন।" জানান সংস্থার এক কর্মী। ওঁদের অনেকের মত, দু'বছরে সংস্থায় নতুন টাকার জোগান কমেছিল। বহু জায়গায় এজেন্টরা ধোঁকা দিয়ে নিজস্ব সংস্থা গড়ে টাকা তুলতে শুরু করেন। এই সমস্যার মোকাবিলা করতেই সাংবাদিকতাকে লগ্নির ব্যবসায় জড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনা।
সারদার কর্মচারীদের মুখে পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, জেলাস্তরের সংবাদপত্রকর্মী নিয়োগের জন্য মার্চে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে তিন দিন ইন্টারভিউ হয়। 
এক কর্মী বলেন, "ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীদের বলা হয়েছিল, দু'শো জন মোটা অঙ্কের লগ্নিকারী জোগাড় করতে পারলেই সারদার কাগজে জেলা সাংবাদিকের চাকরি পাকা।" তাঁর ব্যাখ্যা, "স্যার ভেবেছিলেন, এতে দু'দিক দিয়ে লাভ হবে। প্রথমত, সাংবাদিক নিজেই এজেন্ট হিসেবে কাজ করলে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে। দ্বিতীয়ত, সাংবাদিকের সঙ্গে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের যোগাযোগের সুবাদে টাকা তোলার কাজ নির্বিঘ্নে হবে।" কলকাতায় নগদ টাকা চালানের সময়ে 'প্রেস' স্টিকার লাগানো গাড়িগুলো ব্যবহারের কথাও সুদীপ্তবাবুর মাথায় ছিল বলে তাঁর কর্মী মহলের খবর। তদন্তকারীরা এখন জানতে চান, সারদা-কর্তা জেলাস্তরে ঠিক কী ভাবে জাল বিছাতে চেয়েছিলেন। মুম্বইয়ে বা ত্রিপুরা-ছত্তীসগঢ়-ওড়িশা-বিহারে দফতর খোলার পিছনে তাঁর আরও কী উদ্দেশ্য ছিল, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। পুরো চক্রের আন্দাজ পেতে ওই সব রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। রাজ্যে লগ্নি-প্রকল্পে গ্রাহক জোগাড় করতে সারদা কত 'বৈচিত্র্যের' সঙ্গে জাল বিছিয়েছিল, তার একটা আন্দাজ তদন্তকারীরা পেয়ে গিয়েছেন। 
কী রকম? গোয়েন্দাদের দাবি: এজেন্টরা তো বটেই, ডাকঘরে-ডাকঘরে ছড়িয়ে পড়েছিলেন সারদার 'কাউন্সেলরেরাও।' যাঁদের কাজ ছিল, পোস্ট অফিসে বিভিন্ন সঞ্চয়-প্রকল্পে টাকা জমা দিতে আসা মানুষকে 'বোঝানো।' মানুষকে বিশদে বলা হতো, পোস্ট অফিসের বদলে সারদার প্রকল্পে টাকা রাখলে কত বেশি লাভ, বাড়তি সুবিধাই বা কত। প্রয়োজনে লগ্নিকারীদের বাড়িতেও পৌঁছে যেতেন তাঁরা। এক গোয়েন্দা-কর্তার কথায়, "সুদীপ্তবাবুর মনে হয়েছিল, সাধারণ এজেন্টরা শিক্ষিতদের অনেক কিছু বোঝাতে পারছেন না। তাই সমাজের তথাকথিত উপর মহলে জাল ছড়ানোর লক্ষ্যে শিক্ষিত ও বলিয়ে-কইয়ে ছেলে-মেয়েদের কাউন্সেলর হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।" 
বহু ক্ষেত্রে ফলও মিলতে শুরু করে। নিম্নবিত্তের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারদার বাহু বিস্তৃত হয় অভিজাত সমাজের অন্দরে। বেশ কিছু চিকিৎসক, শিক্ষক, এমনকী ব্যাঙ্ক-অফিসারও এ ভাবে সারদার ফাঁদে পা দেন। তবে 'বোঝাতে' গিয়ে কখনও কখনও ফ্যাসাদেও পড়তে হয়েছে। যেমন হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার এক ডাকঘরে। সংস্থার এক পদস্থ আধিকারিক জানাচ্ছেন, ওখানে পুলিশের খপ্পরে পড়েছিলেন এক কাউন্সেলর। এক বৃদ্ধার অভিযোগ ছিল, সারদায় টাকা ঢালার জন্য ওই ব্যক্তি তাঁকে টানা কয়েক মাস ধরে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। অভিযুক্ত কাউন্সেলর শেষমেশ ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রা কোনও মতে রেহাই পান।


http://www.anandabazar.com/30raj3.html

পিএসি-কে চিঠি অর্থ মন্ত্রকের
৯ মাস আগেই রাজ্যকে সতর্কবার্তা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের
ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির ব্যাপারে ন'মাস আগেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সতর্ক হতে বলেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, সেবি-র চেয়ারম্যানরা। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-কে জানানো হয়েছে, গত বছর জুনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-সহ দেশের সব আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি বৈঠকে বসে। সাধারণ মানুষের থেকে বেআইনি ভাবে অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় ওই বৈঠকে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বাড়বাড়ন্ত রুখতে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের আর্থিক অপরাধ শাখার সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি-র মতো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির সমন্বয় আরও বাড়াতে হবে। সে জন্য রাজ্য স্তরে এই সব সংস্থাকে নিয়ে যে সমন্বয় কমিটি রয়েছে, তার বৈঠক ঘনঘন ডাকার জন্য রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করে একটি চিঠিও পাঠানো হয়। অর্থ মন্ত্রকও সব রাজ্যকে এ নিয়ে চিঠি পাঠায়। 
সারদা-কাণ্ডের পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে, ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলির কাজকর্মের বিষয়ে রাজ্যকে কিছুই জানায়নি কেন্দ্র। সেই দাবি ভুল প্রমাণ করতে এ বার পিএসি-কে দেওয়া অর্থ মন্ত্রকের নোটকে হাতিয়ার করছে সিপিএম। দলের রাজ্যসভার সদস্য প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কাজকর্ম নিয়ে পিএসি-র চেয়ারম্যান মুরলীমনোহর জোশীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। জোশী সেই অভিযোগ পাঠিয়ে দেন অর্থ মন্ত্রকের কাছে। এ বার অর্থ মন্ত্রক তার জবাব দিয়েছে। সিপিএম নেতারা অর্থ মন্ত্রকের এই চিঠিকে হাতিয়ার করেই সংসদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে চাইছেন। সারদা-কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের দাবিতেও এই চিঠিই বড় অস্ত্র তাদের। 
চিঠিতে কী বলেছে অর্থ মন্ত্রক?
মন্ত্রকের তরফে পিএসি-কে জানানো হয়েছে, ১ এপ্রিল পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের ২৬টি সংস্থার বিরুদ্ধে সেবি ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ছাড়াও পূর্ব ভারতের বিভিন্ন আদালতে এই ধরনের সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ৫৮টি মামলা চালাচ্ছে সেবি। একটি মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। অর্থ বিষয়ক দফতরের মূলধনী বাজার শাখার সহ-অধিকর্তা জয়পাল শর্মা ১৪ এপ্রিল পিএসি-কে জানিয়েছেন, গত বছরের ১৪ জুন হায়দরাবাদে আর্থিক স্থায়িত্ব উন্নয়ন পরিষদের বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও, সেবি-র চেয়ারম্যান ইউ কে সিনহা, বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএ-র চেয়ারম্যান ডি হরিনারায়ণ, পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান যোগেশ অগ্রবাল-সহ অনেকে। ওই বৈঠকে ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কাজকর্ম নিয়ে আলোচনায় দেখা যায়, রাজ্যের সঙ্গে এই সংস্থাগুলির সমন্বয় আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এর পরেই আর্থিক পরিষেবা দফতরের তরফে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যকে চিঠি লেখা হয়।
অর্থ মন্ত্রকের তরফে পিএসি-কে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়েই ওই চিঠি পাঠানো হয়। প্রশান্তবাবুর কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, উনি কিছু দিন আগে সারদা গোষ্ঠীর কাজকর্ম সম্পর্কে জেনেছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের চিঠি থেকে স্পষ্ট, ন'মাস আগেই তাঁর সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। সারদা-র মতো বহু সংস্থার বিরুদ্ধে যে সেবি বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অনেক আগে থেকে তৎপর হয়েছিল, তা-ও ওই চিঠিতে রয়েছে।" প্রশান্তবাবু বলেন, "অসংখ্য মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রেরও দায়িত্ব এঁদের সুরাহা দেওয়া।" 
কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী সচিন পায়লট আজ জানিয়েছেন, আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সাহায্য করতে চান। পায়লট বলেন, "আমাদের এখন লক্ষ্য হল, পরিস্থিতি সামাল দিয়ে লগ্নিকারীরা যাতে তাঁদের আমানত ফেরত পান, তা দেখা এবং এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সাহায্য করা।" কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যুক্তি, সংসদের চলতি অধিবেশনে কোম্পানি বিল পাশ করানো গেলে এ সব ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে। কারণ কোম্পানি বিলে ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলির প্রতারণা রুখতে আরও স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান আইনে যে সব ফাঁকফোকর রয়েছে, সেগুলিকেই কাজে লাগাচ্ছে ভুঁইফোড় সংস্থাগুলি। অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, এ জন্য সেবি-র ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ১৯৭৮ সালের প্রাইজ চিট ও মানি সার্কুলেশন (ব্যানিং) আইনটিকেও মজবুত করার প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


পুরনো খবর:
http://www.anandabazar.com/30raj4.html
নালিশ অনলাইনেও
বিজ্ঞপ্তির আগেই কমিশনে ঢালাও অভিযোগপত্র, আজই শুরু শুনানি
শুধু আর্তনাদ বা বিক্ষোভ নয়। সুরাহার আশায় প্রতারিত মানুষজন যে তদন্ত কমিশনের দিকেও তাকিয়ে আছেন, তার প্রমাণ মিলতে শুরু করেছে। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশন গড়া হয়েছে শুনেই সেখানে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন অন্তত ৩২ জন। এবং আজ, মঙ্গলবারেই শুনানি শুরু করছে কমিশন। সোমবার কমিশনের প্রথম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পরেই অভিযোগ নেওয়ার কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এ দিনের বৈঠকের পরে কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি শ্যামলকুমার সেন বলেন, "ইতিমধ্যেই ৩২ জন মানুষ দফতরে এসে অভিযোগপত্র পেশ করে গিয়েছেন। তাঁদের উদ্বেগের কথা ভেবেই মঙ্গলবার শুনানি শুরু হচ্ছে।" উচ্চ পর্যায়ের ওই তদন্ত কমিশনে রাখা হয়েছে রাজ্য অর্থ নিগমের চেয়ারম্যান অম্লান বসু এবং পুলিশকর্তা যোগেশ চট্টোপাধ্যায়কে। কমিশনের অন্য দুই সদস্যের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এ দিন কমিশনের প্রথম বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাস্ট্রসচিব, অর্থসচিব এবং ডিজি।
শ্যামলবাবু জানান, সরকারি বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পরে কলকাতায় কমিশনের অফিস ছাড়াও দুর্গাপুর, রাজারহাট (নিউ টাউন) ও শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় অভিযোগ জমা নেওয়া হবে। মহাকরণ সূত্রের খবর, জেলার বাসিন্দাদের কথা ভেবেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় অভিযোগপত্র পেশের কেন্দ্র খোলার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শামিয়ানার তলায় আমানতকারী-এজেন্টদের জমায়েত। রাজারহাট-নিউ টাউনে।
কোন এলাকার বাসিন্দা কোথায় অভিযোগপত্র জমা দেবেন?
শ্যামলবাবু বলেন, "দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার মানুষ রাজারহাটে ফিনান্সিয়াল হাবে, কয়েকটি জেলার মানুষ দুর্গাপুরে এবং উত্তরবঙ্গের মানুষ মাটিগাড়ায় অভিযোগপত্র পেশ করতে পারবেন। ওই সব জায়গায় সরকারি কর্মীরাই আমানতকারী ও এজেন্টদের কাছ থেকে অভিযোগপত্র নেবেন। তাঁরা তা পাঠিয়ে দেবেন কমিশনে। কমিশনের অফিসেও অভিযোগজমা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ডাকেও অভিযোগ পাঠানো যাবে। অভিযোগ গ্রহণ করা হবে অনলাইনেও।
জেলায় জেলায় অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্র কবে চালু হবে? শ্যামলবাবু বলেন, "সবিস্তার সূচি সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। আগামী দু'তিন দিনের মধ্যেই ওই বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে।"
সাংবাদিকদের মুখোমুখি শ্যামল সেন।
কমিশন কী কী দেখবে?
শ্যামলবাবু জানিয়েছেন, সারদা গোষ্ঠীর মোট সম্পত্তি কত, দায় কত এবং কত জন আমানতকারী টাকা পাবেন, কমিশন তা খতিয়ে দেখবে।
৫ নম্বর কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে তদন্ত কমিশনের অফিসে এ দিন সারদা গোষ্ঠীর জনা তিরিশ এজেন্ট ও আমানতকারীরা জড়ো হন। তাঁদের অনেকেই ওই গোষ্ঠীর বারুইপুর শাখার এজেন্ট বা গ্রাহক। কোন প্রকল্পে কত দিন ধরে কত টাকা জমা দিয়েছেন, কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগে সবই জানান তাঁরা। সেই সঙ্গে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করার আর্জিও জানান কমিশনের কাছে।
আমানতকারীদের অভিযোগ, টাকা ফেরত চেয়ে কী ভাবে আবেদন করতে হবে, অভিযোগ জানানোর ধরন কী হবে, সেই বিষয়ে এ দিনও কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। কমিশনের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, সরকারি বিজ্ঞপ্তি বেরোলেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।
রাজারহাট-নিউ টাউনেও এ দিন হাজির হয়েছিলেন শ'খানেক আমানতকারী। আমানতকারী ও এজেন্টদের জন্য সেখানে শামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। খোলা হয়েছে পুলিশের একটি হেল্প ডেস্কও। অস্থায়ী শৌচাগারও তৈরি। শামিয়ানার তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন কণিষ্ক চৌধুরী নামে বেহালার এক বাসিন্দা এবং তাঁর বোন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। কণিষ্কবাবু বলেন, "বিধাননগর কমিশনারেট থেকে জানানো হয়েছিল, সকাল ১০টা থেকে হিডকোর ফিনান্স অফিসে সার্টিফিকেট জমা নেবে। খুব ভিড় হবে ভেবে সকাল ৮টায় চলে এসেছিলাম। বেলা ৩টে পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কিছু হল না। অফিস ছুটি নিয়ে হয়রানির চূড়ান্ত হল।" কণিষ্কবাবু ও তাঁর বোন দু'জনে মিলে কয়েক লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন সারদায়। মার্চ পর্যন্ত সুদ পেয়েছেন। তার পরে আর কিছুই পাননি। কৃষ্ণাদেবী বলেন, "আমাদের সুদ দরকার নেই। আসলটা ফেরত পেলেই যথেষ্ট। প্রথম দিনেই যা অব্যবস্থা দেখলাম, মনে হচ্ছে, টাকা ফেরত পাওয়াটা বিশ বাঁও জলে!"
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, পরিকাঠামোগত কিছু ত্রুটির জন্য এ দিন কাজ হয়নি। তবে মঙ্গল-বুধবারের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
—নিজস্ব চিত্র।


http://www.anandabazar.com/30raj5.html

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Tweeter

Blog Archive

Welcome Friends

Election 2008

MoneyControl Watch List

Google Finance Market Summary

Einstein Quote of the Day

Phone Arena

Computor

News Reel

Cricket

CNN

Google News

Al Jazeera

BBC

France 24

Market News

NASA

National Geographic

Wild Life

NBC

Sky TV